সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দক্ষিণে অবস্থিত শিয়া মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র স্থান সাইয়্যেদা জয়নাব (রা.)-এর মাজারে এ বছর আশুরা উপলক্ষে কোনো আনুষ্ঠানিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। নিরাপত্তাজনিত কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে হতাশ হয়ে সিরিয়ার পরিবর্তে এবার ইরানের ধর্মীয় কেন্দ্রগুলোর দিকে ঝুঁকছেন ইরাকি তীর্থযাত্রীরা।
প্রতি বছর মহররমের ১০ তারিখ, আশুরায়, হাজার হাজার তীর্থযাত্রী নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নাতনি হজরত জয়নাব (রা.)-এর স্মরণে মাজারে জড়ো হন। তবে এবার অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ায় অনেক তীর্থযাত্রী বিকল্প হিসেবে কোম শহরের ফাতিমা মাসুমা (রা.) মাজারের মতো ইরানি পবিত্র স্থানগুলোতে গেছেন।
ইরাকের আল-দিওয়ানিয়া প্রদেশের বাসিন্দা উম হাসান জানান, ‘আমি প্রতিবছর সিরিয়া যাই। এবারও প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু যখন জানলাম কোনো আনুষ্ঠানিকতা হবে না, মন খারাপ হয়ে গেল। পরে আমি ইরানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’
সিরিয়ার ধর্ম মন্ত্রণালয় অবশ্য জানিয়েছে, তারা মাজার বন্ধ বা অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করেনি। তবে মাজার কর্তৃপক্ষের একটি অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, নিরাপত্তা ও সংগঠনের সুবিধার্থে অনুষ্ঠান মাজার প্রাঙ্গণ থেকে বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পর অনেক ইরাকি তীর্থসংগঠক সিরিয়া সফর বাতিল করে ইরানকে প্রধান গন্তব্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্থিতিশীল নয়, সেইসঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনাও বেড়েছে। ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুকতাদা আল-সাদের ঘনিষ্ঠ ইসাম হুসেইন সিরিয়া সফর পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ তোলেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিরিয়ায় মাজার সফরের চাহিদা বাড়লেও এবার আশুরা সামনে রেখে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত কারণে ঐতিহ্যবাহী তীর্থযাত্রায় ভাটা পড়েছে। ফলে ইরান-ইরাক ধর্মীয় সম্পর্ক ও আঞ্চলিক তীর্থযাত্রার সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।