ইরান-ইসরায়েল ১২ দিনের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, কূটনৈতিক আলোচনায় ফেরার পথে এখনই রাজি নয় ইরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচনার সম্ভাবনার কথা বললেও, ইরান জানিয়ে দিয়েছে—এই মুহূর্তে তাদের সে পরিকল্পনা নেই।
সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, “কূটনীতির দরজা কখনো পুরোপুরি বন্ধ হয় না। তবে আমি মনে করি না আলোচনা এত দ্রুত আবার শুরু হবে।”
গত ২১ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফরদো, ইসফাহান ও নাটান্জ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এরপরই শুরু হয় টানা ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ, যা শেষ হয় আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় এক যুদ্ধবিরতিতে।
এই প্রেক্ষাপটে আরাঘচি বলেন, “আলোচনায় ফিরতে হলে আমাদের আগে নিশ্চিত হতে হবে যুক্তরাষ্ট্র আর হামলা চালাবে না।” তিনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ ছিল আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, “স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হলেও সেগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ফের শুরু করতে পারবে।”
এ প্রসঙ্গে আরাঘচি বলেন, “বোমা ফেলে প্রযুক্তি ও জ্ঞান ধ্বংস করা যায় না। আমাদের ইচ্ছা থাকলে আমরা আবার এগিয়ে যেতে পারব।” তিনি ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘জাতীয় গর্বের অংশ’ বলেও অভিহিত করেন।
এদিকে, আগামী ৭ জুলাই হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বৈঠকে ইরান ইস্যু গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণের মাত্রা বাড়ালে ফের হামলার নির্দেশ দিতে পারেন।
জবাবে আরাঘচি বলেন, “এমন পদক্ষেপের কোনো আন্তর্জাতিক আইনগত ভিত্তি নেই। আমরা প্রস্তুত। ১২ দিনের যুদ্ধে প্রমাণ করেছি, নিজেদের রক্ষা করতে পারি। যদি আবার হামলা হয়, আমরা প্রতিরোধ করবই।”