মধ্যপ্রাচ্য যখন যুদ্ধের দোলাচলে, ঠিক তখনই ফিরে এসেছেন এক সাহসিনী—ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর এক নারী যুদ্ধ নেভিগেটর, যিনি অংশ নিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার রাতে ইরানে পরিচালিত বোমাবর্ষণে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই পাইলটকে ‘মেজর শিন’ নামে চিহ্নিত করেছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী (IAF)। মিশন শেষে তিনি বলেন, “আমি ককপিটে বসে শুধু আকাশে ছিলাম না, আমি ছিলাম ইতিহাসের অংশ।”
এই মিশন ছিল ১,৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ, যেখান থেকে ফিরতে হয়েছে কৌশল, নিখুঁত সিদ্ধান্ত ও ভয় জয় করার সাহস নিয়ে। মেজর শিন বলেন, “যখন আমরা উড়ছিলাম, তখন প্রতিটি সেকেন্ড ছিল আমাদের জাতির অস্তিত্বের প্রতীক। আমরা কেবল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানিনি, আমরা ভবিষ্যৎকে নিরাপদ করার শপথ পালন করেছি।”
ইসরায়েলের ইতিহাসে এমন প্রকাশ্য মন্তব্য নারী পাইলটদের কাছ থেকে বিরল। তাই এই বক্তব্য শুধু যুদ্ধের ডায়েরিতে নয়, সমাজচিন্তার পরিসরেও জায়গা করে নিচ্ছে। শিনের কথায়, “আমরা আমাদের ঘরকে নিরাপদ রাখতে উড়ি, কারণ ঘর ভাঙলে আকাশও আর আশ্রয় দেয় না।”
অন্যদিকে, ইরানি বার্তা সংস্থা তাসনিম দাবি করছে, এই অভিযানের সময় ইসরায়েলের অন্তত ১০টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এক নারী পাইলটকে আটকও করা হয়েছে—যদিও নাম বা ছবি প্রকাশ করা হয়নি।
এই দাবির সত্যতা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভিন্নমত রয়েছে। কেউ বলছেন, এটি মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করার কৌশল। আবার কেউ ইঙ্গিত দিচ্ছেন, ইসরায়েলের পক্ষে প্রকাশ্যে নারীর অংশগ্রহণ দেখানো এবং ইরানের পক্ষ থেকে তা নস্যাৎ করার চেষ্টা একই সময়ের ভিন্ন প্রপাগান্ডার রূপ।
যেখানে এক পক্ষ বলছে, ‘শান্তির জন্য যুদ্ধ’, অন্য পক্ষ বলছে, ‘জবাবের জন্য প্রতিরোধ’। মেজর শিনের বক্তব্য তাই কেবল একটি সামরিক অভিযানের গল্প নয়, বরং এক আত্মপরিচয় রক্ষার লড়াইয়ের প্রতিধ্বনি—“আমি ফিরেছি, কারণ আমাকে ফিরতেই হতো।”