অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ চত্বরে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দল বেঁধে প্রবেশ করে প্রার্থনা ও নানা ধর্মীয় আচার পালন করেছে শতাধিক অবৈধ ইসরায়েলি বসতকারী। এ সময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী কর্মী চার্লি কার্কের স্মরণে বিশেষ প্রার্থনা করে।
হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম স্রুগিম জানায়, প্রার্থনাটি পরিচালনা করেন কট্টরপন্থী রাব্বি ও সাবেক কনেসেট সদস্য ইয়েহুদা গ্লিক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে আল-আকসায় ইহুদিদের প্রবেশাধিকার বাড়ানোর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, বসতিস্থাপনকারীরা দলবদ্ধভাবে আল-আকসায় প্রবেশ করে গান-বাজনা ও নৃত্যসহ নানা আচরণে লিপ্ত হয়। আসন্ন ইহুদি নববর্ষকে কেন্দ্র করে এই ধরনের অনুপ্রবেশ আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলেও সংস্থাটি জানায়।
এদিকে ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে, ছুটির সময় বাড়তি নিরাপত্তার অজুহাতে পশ্চিম তীরে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
আল-আকসা মসজিদ মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। তবে ইহুদিরা একে টেম্পল মাউন্ট বলে দাবি করে থাকে। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল এবং ১৯৮০ সালে পুরো শহরটি নিজেদের সঙ্গে যুক্ত ঘোষণা করে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়নি।
ফিলিস্তিনিরা মনে করে, আল-আকসায় বসতিস্থাপনকারীদের হামলা পূর্ব জেরুজালেমকে ‘ইহুদিকরণ’ ও শহরের আরব-ইসলামিক পরিচয় মুছে ফেলারই অংশ। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক প্রস্তাব অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমই হবে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনা ও বসতিস্থাপনকারীদের হামলায় পশ্চিম তীরে অন্তত ১ হাজার ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন সাত হাজারেরও বেশি মানুষ।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এক মতামতে জানিয়েছে—ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অবৈধ এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের সব বসতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র : মিডলইস্ট মনিটর