দেশজুড়ে চলমান সহিংস-বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। সোমবার সন্ধ্যার দিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী কাঠমান্ডুর বালুয়াটারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক শুরু হয়েছে। এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক।
বৈঠকে অংশ নেওয়া দেশটির একজন মন্ত্রীর বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট বলেছে, সোমবার দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভে কাঠমান্ডুতে ১৭ জন, ইতাহারিতে দু’জন নিহত ও ৪০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। জেন-জি প্রজন্মের তরুণী-তরুণীদের বিক্ষোভে হতাহতের এই ঘটনায় নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন।
এর আগে, সোমবার সকালের দিকে নেপালি কংগ্রেসের দপ্তর প্রধানদের বৈঠকে দলটির দুই মহাসচিব গগন থাপা এবং বিশ্ব প্রকাশ শর্মা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেখকের পদত্যাগের দাবি জানান। বিক্ষোভ সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় নৈতিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন দলটির দুই মহাসচিব।
এ সময় কংগ্রেস সভাপতি শের বাহাদুর দেউবা নীরব থাকলেও লেখক বৈঠকে জানান, তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং পরে মন্ত্রিসভা বৈঠকে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
গত বছরের ১৫ জুলাই নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন রমেশ লেখক।
সরকারি প্রশাসনে দুর্নীতির অবসান ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে নেপালের জেন-জি প্রজন্মের হাজার হাজার তরুণ-তরুণী সোমবার কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভ শুরু করেন। তরুণদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে কাঠমান্ডু থেকে বর্তমানে দেশের বড় বড় শহরে ছড়িয়ে পড়েছে।
সোমবার কাঠমান্ডু এবং অন্যান্য শহরে তরুণ প্রজন্মের এই বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংস আকার ধারণ করে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কারফিউ জারির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান, রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
এতে সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি ও আরও শত শত বিক্ষোভকারীর আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। সহিংসতার এই ঘটনায় দেশটির ক্ষমতাসীন শর্মা সরকারের ওপর ব্যাপক রাজনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট