দীর্ঘ প্রায় দুই দশক কোমায় থাকার পর অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন সৌদি রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে শনিবার (১৯ জুলাই) তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছে সৌদি রাজপরিবার। কোমায় থাকার সময় তাকে ‘স্লিপিং প্রিন্স’ বা ‘ঘুমন্ত রাজপুত্র’ নামে ডাকা হতো।

গালফ নিউজ জানায়, ২০০৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন আল ওয়ালিদ। মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত ও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলে তিনি কোমায় চলে যান। এরপর দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে রিয়াদের কিং ফয়সাল স্পেশালিস্ট হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আল ওয়ালিদ ছিলেন সৌদি বিলিয়নিয়ার প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন তালালের ভাগ্নে এবং প্রিন্স খালেদ বিন তালালের জ্যেষ্ঠ পুত্র।

২০১৯ সালে তার পরিবারের প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোমায় থাকা অবস্থাতেও তিনি সামান্যভাবে আঙুল নাড়াচ্ছেন। এতে তার পরিবারসহ অনেকেই আশাবাদী হয়ে উঠলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেনের অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটেনি।

তার বাবা প্রিন্স খালেদ সবসময়ই ছেলের লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে ফেলার বিরোধিতা করে আসছিলেন। তার বিশ্বাস ছিল, “জীবন-মৃত্যু আল্লাহর হাতে।” এই বিশ্বাসে তিনি বছরের পর বছর ছেলের পাশে থেকেছেন, প্রার্থনা করে গেছেন নিরন্তর।

রবিবার বাদ আসর রিয়াদের ইমাম তুর্কি বিন আবদুল্লাহ মসজিদে প্রিন্স আল ওয়ালিদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তার বাবা।

সৌদি আরবজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে #SleepingPrince হ্যাশট্যাগ। অনেকেই আল ওয়ালিদকে মনে করছেন ধৈর্য, বিশ্বাস এবং পিতামাতার নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে।

বহু বছর ধরে চলা এক নিঃশব্দ সংগ্রাম ও ভালোবাসার গল্পে আজ অবসান ঘটলেও, মানুষ তাকে মনে রাখবে শুধুই একজন রাজপুত্র হিসেবে নয়—বরং একজন বাবার অদম্য আশার প্রতীক হিসেবেও।

সূত্র: গালফ নিউজ