গাজার মাটি আজ শোকের স্রোতে ভেসে আছে। প্রায় দু’বছর ধরে ইসরাইলের হামলার ফলে এই অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। চলমান সহিংসতায় ইতিমধ্যেই ২৭০০ ফিলিস্তিনি পরিবার নিঃশেষ হয়েছে। তাছাড়া, অঞ্চলটির প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। তবু যুদ্ধ থেমে নেই; বরং প্রতিদিনই নৃশংসতার মাত্রা বাড়ছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “যুদ্ধের কারণে প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ ৬৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। দখলদাররা সামরিক শক্তি এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির মাধ্যমে গাজার ৮০ শতাংশেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে।” একই সঙ্গে তারা আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতার নিন্দা জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের হামলায় ৭৩,৭৩১ জন ফিলিস্তিনি নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন, যার মধ্যে ২০,০০০ শিশুই রয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১২,৫০০ জন নারী এবং ১,৬৭০ জন চিকিৎসাকর্মী, ২৪৮ জন সাংবাদিক, ১৩৯ জন উদ্ধারকর্মী এবং ১৭৩ জন পৌরকর্মী রয়েছেন। এ হামলায় ১ লাখ ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিকভাবে গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধের জন্য প্রতিবাদও চলছে। যুক্তরাজ্য ও মরক্কোর পাশাপাশি এবার সুইডেন ও ফ্রান্সেও হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। স্টকহোমে ওডেনপ্ল্যান স্কোয়ারে নাগরিক সমাজের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর আহ্বানে শত শত মানুষ জড়ো হন এবং সুইডিশ সরকারের কাছে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেন। প্যারিসে প্লেস দ্য লা রিপাবলিকের সামনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধের আহ্বান জানান। একই দিনে লন্ডনে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন; এই সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় এবং ৪২৫ জন গ্রেপ্তার হন।

এদিকে, গাজা সিটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বহুতল ভবনটি ইসরাইলি সেনারা ধ্বংস করেছে। চলমান সংঘাতে এটি নিকট অতীতের মধ্যে প্রথম বড় টাওয়ার যা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।