ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে সরব ভূমিকার জেরে জাতিসংঘের ফিলিস্তিন অধিকারের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রান্সেস্কা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (১০ জুলাই) এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ ঘোষণা দেন।
রুবিও তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, “আমরা আমাদের মিত্র ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে অটল আছি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক হামলার প্রচেষ্টা বরদাশত করা হবে না।”
আলবানিজ দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান, ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অবরোধ পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘে প্রতিবেদন দিয়ে আসছিলেন। তিনি ইসরায়েলকে ‘আপারথেইড রাষ্ট্র’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন এবং গাজায় হামাসের সহিংস প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যায় বলেন, “এটি অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত নয়।”
এছাড়া তিনি এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার হুমকিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে বিবেচনার আহ্বান জানান। এছাড়া মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্প খাত এবং এর ভূমিকা নিয়েও তিনি সমালোচনা করেন।
আলবানিজের বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষী মনোভাব পোষণের অভিযোগও রয়েছে। এক সময় তিনি বলেছিলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি মূলত ইহুদি লবির দ্বারা প্রভাবিত।” যদিও তিনি পরবর্তীতে এই মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন, কিন্তু বিতর্ক থামেনি।
নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে একে স্বাগত জানানো হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সা’আর বলেন, “জাতিসংঘের এখন চোখ খুলে দেখা দরকার যে তারা কাদের প্রতিনিধি নিযুক্ত করছে।”
ইসরায়েলের জাতিসংঘে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন বলেন, “আলবানিজ জাতিসংঘের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।”
মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউএন ওয়াচ-এর নির্বাহী পরিচালক হিলেল নয়েউর বলেছেন, “এটি একটি সাহসী এবং যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এর আগে কোনো জাতিসংঘ কর্মকর্তার ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপের নজির নেই।”
যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের পরও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।