উত্তর ইথিওপিয়ায় প্রায় ১২ হাজার বছর ধরে সুপ্ত আগ্নেয়গিরি হাইলি গুব্বিতে হঠাৎ অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে। রবিবার সকালে কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা এই অগ্ন্যুৎপাত থেকে ছড়িয়ে পড়া ছাইয়ের মেঘ লোহিত সাগর পেরিয়ে ইয়েমেন ও ওমানের দিকে ধেয়ে যায়। এরপর ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছেছে।
ছাইয়ের কারণে ভারতে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল, বিলম্বিত বা রুট পরিবর্তন করা হয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়া ১১টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। অন্যদিকে ইন্ডিগো, আকাসা এয়ার এবং কেএলএম-এর মতো বিমান সংস্থাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এক্স-এ এক বিবৃতিতে ইন্ডিগো জানিয়েছে, তারা ‘আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে’ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। মুম্বাই বিমানবন্দর যাত্রীদের বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে তাদের ফ্লাইটের অবস্থা পরীক্ষা করতে বলেছে।
দেশটির বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমান সংস্থাগুলোগে আক্রান্ত এলাকাগুলো কঠোরভাবে এড়িয়ে চলতে বলা বলেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছাইয়ের কারণে দূষণের মাত্রা স্পষ্ট নয়, তবে এটি দিল্লির বায়ুর গুণমানকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা কম। যদিও দিল্লির বাতাস আজ মঙ্গলবারের সরকারি তথ্য অনুসারে ‘খুব খারাপ’ ছিল।
আগ্নেয়গিরির ছাই ক্ষুদ্র কণার ছাই, যা আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাতের সময় বায়ুমণ্ডলে নির্গত হয়।
এই ছাই বিমানের ইঞ্জিনগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, বিমানবন্দরের পরিবেশ দূষিত করতে পারে। এ ছাড়া দৃশ্যমানতা হ্রাস করতে পারে, যা বিমান পরিচালনার জন্য বিপজ্জনক। আগ্নেয়গিরির ছাই দূষণের তিনটি স্তর রয়েছে নিম্ন, মাঝারি এবং উচ্চ। উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করার আগে একজন পাইলট কতক্ষণ এই ঘনত্বে উড়তে পারেন তার নির্দেশিকা রয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘ছাই ছড়িয়ে পড়ার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮.৫ কিলোমিটার (৫.২ মাইল) থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে।
’ মহাপাত্র বলেন, ‘এটি সাময়িকভাবে উপগ্রহের কার্যকারিতা এবং বিমান পরিচালনার ওপর প্রভাব ফেলবে। তবে আবহাওয়া বা বায়ুর গুণমানকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা কম। ছাই গত রাতে উত্তর ভারতে পৌঁছেছে এবং মনে হচ্ছে চীনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
বেসরকারি সংস্থা স্কাইমেট ওয়েদারের মতে, ছাই ছড়িয়ে পড়তে কত সময় লাগবে তা বলা কঠিন। তবে আইএমডি অনুমান করছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে দিল্লির আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের মেঘ বিরল। কিন্তু ২০১০ সালে যখন আইসল্যান্ডের আইজাফজাল্লাজোকুল আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে, তখন বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল। যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় আকাশসীমা বন্ধ বা আংশিকভাবে বন্ধ ছিল, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল।
সূত্র : বিবিসি