মুসলিম নারীদের বোরকা ও নিকাব পরা সীমিত বা নিষিদ্ধ করতে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ইতালি। দেশটির ক্ষমতাসীন ডানপন্থি রাজনৈতিক দল ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ এ সংক্রান্ত একটি বিল সংসদে উত্থাপন করতে যাচ্ছে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) ইউরোপীয় রাজনৈতিক মাধ্যম পলিটিকো-এর বরাতে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, সরকার এটিকে ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ’ হিসেবে দেখছে।

প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী, আইনটি পাস হলে দোকান, বিদ্যালয়, সরকারি অফিসসহ সব ধরনের জনসমাগমস্থলে মুখ পুরোপুরি ঢেকে রাখার পোশাক পরা নিষিদ্ধ হবে।

এ আইন ভঙ্গ করলে ৩০০ থেকে ৩ হাজার ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ৪৩ হাজার থেকে ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা) পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

বিলের অন্যতম প্রণেতা ও সংসদ সদস্য আন্দ্রেয়া দেলমাস্ট্রো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা অবশ্যই সম্মানযোগ্য, তবে তা হতে হবে সংবিধান ও ইতালির নাগরিক মূল্যবোধের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে।

তিনি আরও বলেন, এই আইন মূলত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ও সামাজিক ঐক্য রক্ষার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।

অভিবাসনবিষয়ক মুখপাত্র সারা কেলানি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিলটির প্রধান উদ্দেশ্য তিনটি, মসজিদসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে স্বচ্ছতা আনা। মুখ পুরোপুরি ঢেকে রাখা পোশাক সীমিত করা। জোরপূর্বক বিবাহ ও বিদেশি অনুদানের অস্বচ্ছ উৎস প্রতিরোধ করা।

বোরকা এমন এক পোশাক যা নারীর মুখসহ পুরো শরীর আচ্ছাদিত রাখে, আর নিকাবে মুখের নিচের অংশ ঢেকে থাকে, তবে চোখ উন্মুক্ত থাকে।

এর আগেও ইউরোপের বেশ কিছু দেশ নিরাপত্তা ও সামাজিক সংহতির কারণ দেখিয়ে জনসমাগমে এসব পোশাক নিষিদ্ধ করেছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, প্রস্তাবিত এই আইন কার্যকর হলে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।