পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় বড় ধাপ হিসেবে চীন দেশটির জন্য ৩.৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নবায়ন করেছে। এর ফলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সূত্রটি জানায়, চীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে জমা থাকা ২.১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নবায়ন করেছে, যেটি গত তিন বছর ধরে সেই রিজার্ভেই ছিল। পাশাপাশি, ইসলামাবাদ সম্প্রতি যে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক ঋণ পরিশোধ করেছিল, সেটিও নতুন করে অর্থায়ন করেছে বেইজিং।
এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে আরও ১ বিলিয়ন ডলার এবং বহুপাক্ষিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ৫০ কোটি ডলার পেয়েছে পাকিস্তান।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, “এই তহবিলগুলো আমাদের রিজার্ভ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করেছে।”
আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমপক্ষে ১৪ বিলিয়ন ডলার থাকতে হবে। আর চীনা ঋণ নবায়ন এই শর্ত পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা বলছেন, আইএমএফের ৭ বিলিয়ন ডলারের বেইলআউট প্যাকেজের আওতায় চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার দেশটির আর্থিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করেছে।
এর আগে ২০২৫ সালের ৯ মার্চ পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছিল, চীন তাদের ২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ আরও এক বছরের জন্য নবায়ন করেছে।
প্রসঙ্গত, দ্য নিউজ সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণের প্রায় ৯২ শতাংশই বহুপাক্ষিক, দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক বন্ড-নির্ভর। এই তালিকায় চীন সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতা, যাদের অংশীদারিত্ব পাকিস্তানের মোট বৈদেশিক দায়ের সবচেয়ে বড় অংশ।
তবে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের (এসবিপি) সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের ২০ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২.৬৬ বিলিয়ন ডলার কমে ৯.০৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
চীনের ঋণ নবায়ন এবং নতুন বহুপাক্ষিক সহায়তা এই ঘাটতি পূরণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়।