মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের কিয়াউকফিউ শহর ও এর আশপাশে সামরিক জান্তা বাহিনী আর আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষের কেন্দ্রস্থল মিন পিয়িন গ্রাম, যেখানে আরাকান আর্মির পরিকল্পিত হামলা ও কৌশলগত ফাঁদে পড়ার কারণে মিয়ানমার সেনারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি প্রায় ২০টি গ্রাম জনশূন্য হয়ে গেছে এবং নতুন করে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষে বিভিন্ন এলাকায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সামরিক জান্তা। বিদ্রোহীরা ইতিমধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি দখল করেছে। এমন পরিস্থিতিতে জান্তা বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সম্প্রতি মিন পিয়িন থানার সামনে অবস্থানরত সামরিক বাহিনীর ওপর আরাকান আর্মি ড্রোন হামলা চালায়, এতে অন্তত ১০ জন সেনা নিহত হন। এরপর ১৮ নভেম্বর মিন পিয়িন, ওয়া নাচুইন, লাকেটিনসহ আশপাশের গ্রামে বোমাবর্ষণ চালায় জান্তা বাহিনী, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ পালাতে বাধ্য হন।
মিন পিয়িনের কাছে আরাকান আর্মির একটি গুরুত্বপূর্ণ পাহাড়ি শিবির দখল করলেও পরে ব্যাপক পালটা হামলায় জান্তা সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। কিয়াউকফিউ এবং সুরক্ষিত নৌ সদর দপ্তরের পাশে থাকা জান্তা ঘাঁটিগুলোতেও আঘাত হানে আরাকান আর্মি।
বর্তমানে আরাকান আর্মি প্রায় ১৫টি শহর নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং কিয়াউকফিউ ও রাখাইন-মেইনল্যান্ড সীমান্ত এলাকায় জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয়দের মতে, সামরিক বাহিনী এলাকা পুনরুদ্ধারে মরিয়া। শহরে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে দুই পক্ষের সহিংসতা তীব্র হয়ে উঠেছে।
ত্রাণকর্মীরা জানিয়েছেন, কিয়াউকফিউতে চলমান লড়াইয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে দিন কাটাচ্ছে। স্কুল ও গ্রাম লক্ষ্য করে নৌবাহিনী হামলা চালাচ্ছে, ফলে নতুন করে প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।