গাজা যুদ্ধ বন্ধে গত সপ্তাহে ৮ মুসলিম ও আরব দেশের নেতা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বৈঠকে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি পরিকল্পনার ২১ দফা প্রস্তাব পেশ করেন তিনি এবং আরব নেতারা এই সকল প্রস্তাবে সম্মত ছিলেন। পরে গত সোমবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বৈঠকের পর ২০ দফার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। তবে আরব নেতাদের দাবি ট্রাম্প তাদের সঙ্গে যেসব দফা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন, নেতানিয়াহু সেগুলোতে বড় পরিবর্তন এনেছেন।

মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডেল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফিলিস্তিরি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের যে চূড়ান্ত খসড়া দেওয়া হয়েছে, এটি আরব-মুসলিম নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে তৈরি করা ট্রাম্পের খসড়ার চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন। এতে সৌদি আরব, মিসর তুরস্ক, জর্ডান এবং কাতারসহ অন্যান্য দেশগুলো ক্ষুব্ধ হয়েছে।

আলোচনার সঙ্গে জড়িত একাধিক আরব সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর শেষ মুহূর্তের হস্তক্ষেপ পরিকল্পনাটিকে একটি যৌথ উদ্যোগ থেকে একটি নথিতে পরিণত করেছে, যেখানে গাজায় শান্তির জন্য একটি ন্যায্য কাঠামোর পরিবর্তে ইসরায়েলের নিরাপত্তা অগ্রাধিকারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

গত রোববার হোয়াইট হাউসের ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনানের সঙ্গে ছয় ঘন্টার ধরে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে করেন নেতানিয়াহু এবং তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা রন ডার্মার। এই বৈঠকেই নেতানিয়াহু বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে সক্ষম হন, বিশেষ করে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের শর্ত এবং সময়সূচী সম্পর্কিত ধারাগুলোতে। সেনা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে নেতানিয়াহু কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। এছাড়া প্রত্যাহারের নির্দিষ্ট সময়সীমাও উল্লেখ করা হয়নি।

চূড়ান্ত প্রস্তাবটি তৈরি করা হয়েছে সেখানে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়টি সম্পূর্ণ হামাসের নিরস্ত্রকরণের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ হামাস নিজেদের নিরস্ত্র না করলে দখলদার ইসরায়েল তাদের সেনাদের গাজা থেকে প্রত্যাহার করবে না।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়ে হামাস কোনো পরিবর্তন চাইলে সেটি বিবেচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে পরিকল্পনায় বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।

সূত্র: মিডেল ইস্ট মনিটর