আফগানিস্তানের তালেবান যোদ্ধারা পাকিস্তানের কয়েকটি সীমান্ত চৌকিতে আক্রমণ চালানোর পর দুই দেশের মাঝে তীব্র গোলাগুলি ও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার (১১ অক্টোবর) এই সংঘর্ষের খবর আসে দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র থেকে। আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তালেবান যোদ্ধারা পাকিস্তানের অন্তত দুটি চৌকি দখল করার দাবি করেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি না দিলেও, দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, সীমান্তের পাঁচটি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে এবং তারা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার, কাবুল ও পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বিমান হামলা চালানোর অভিযোগ তোলে তালেবান সরকার। তারা জানিয়েছে, এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
পাকিস্তান সরকার একদিকে হামলার বিষয়টি স্বীকার করেনি, আবার পুরোপুরি অস্বীকারও করেনি। তবে তারা আফগান সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে যেন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে আশ্রয় না দেয়, যাদের পাকিস্তান 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
শনিবার রাত থেকে সীমান্তজুড়ে শুরু হয় তীব্র লড়াই। ডন পত্রিকা জানিয়েছে, পাকিস্তানি বাহিনীর পাল্টা হামলায় আফগান সীমান্তে বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবহৃত হয়েছে ভারী কামান, ট্যাংক ও অন্যান্য অস্ত্র।
তালেবান বাহিনীও জানিয়েছে, তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব সীমান্তে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সংঘর্ষের কথা জানিয়েছে কুনার, নানগারহার, খোস্ত, হেলমান্দ ও পাকতিকা প্রদেশের তালেবান কর্মকর্তারা।
পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়ার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “আজ সন্ধ্যা থেকে তালেবান বাহিনী সশস্ত্র হামলা শুরু করে। প্রথমে আমরা হালকা অস্ত্র ব্যবহার করি, পরে চারটি সীমান্তপয়েন্টে ভারী কামান দিয়ে পাল্টা জবাব দিই।”
তিনি আরও জানান, পাকিস্তান তিনটি আফগান ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে যেগুলো বিস্ফোরক বহনের সন্দেহে ছিল। যদিও এখনো হতাহতের কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। ইসলামাবাদ দাবি করে আসছে যে, টিটিপি ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠী আফগানিস্তানকে নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালায়। এই ইস্যুতে তালেবান সরকারকে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।