দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদের নিচে গোপনে খনন কাজ চালাচ্ছে ইসরায়েল।
এতে মসজিদটির ভিত্তি ও আশপাশের ঐতিহাসিক স্থাপনা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনি প্রশাসন।
ফিলিস্তিনিদের দাবি, আন্তর্জাতিক তদারকি এড়িয়ে এসব খননের মূল উদ্দেশ্য হলো ইসলামি প্রত্ননিদর্শন ধ্বংস করা এবং আল-আকসার ঐতিহাসিক পরিচয় মুছে ফেলা।
তারা বলছে, ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেমকে জোরপূর্বক ইহুদিকরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
রোববার (৩১ আগস্ট) প্রকাশিত আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাঁস হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে আল-আকসার নিচে ইসরায়েলি বাহিনী খনন চালাচ্ছে। জেরুজালেম গভর্নরেট জানায়, ইচ্ছাকৃতভাবে উমাইয়া যুগের মূল্যবান প্রত্ননিদর্শন ধ্বংস করছে দখলদার কর্তৃপক্ষ। এগুলোই প্রমাণ করে মুসলমানদের ন্যায্য মালিকানা এবং ঐতিহাসিক উপস্থিতি।
গভর্নরেটের অভিযোগ, এই কর্মকাণ্ড আসলে কথিত ‘টেম্পল মাউন্ট’ তত্ত্বকে জোরালো করার একটি কৌশল। তারা সতর্ক করে বলেছে, এসব খননের কারণে আল-আকসার স্থাপত্য ও নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ ও ইউনেস্কোকে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রশাসন। তাদের মতে, এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পূর্ব জেরুজালেমে নতুন বাস্তবতা চাপিয়ে দিতে চাইছে ইসরায়েল।
ইতিহাস বলছে, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে তারা পুরো শহর নিজেদের ভূখণ্ডে যুক্ত করার ঘোষণা দেয়। তবে আন্তর্জাতিক মহল এখনো সেই দখল স্বীকৃতি দেয়নি।
২০১৩ সালের মার্চে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ও ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মধ্যে এক চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের সব ইসলামি পবিত্র স্থানের রক্ষণাবেক্ষণ ও সুরক্ষার দায়িত্ব জর্ডানের হাতে।
আল-আকসা মসজিদ মুসলিম বিশ্বের কাছে কাবা শরিফ ও মসজিদে নববীর পরেই তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। অপরদিকে, ইহুদিরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে দাবি করে, যেখানে তাদের প্রাচীন দুটি মন্দির ছিল বলে বিশ্বাস করা হয়।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম