রয়টার্স : সুদানের আল-ফাশিরে মানবিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গতকাল শুক্রবার বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ। আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ শহরের দখল নেওয়ার পর সংঘটিত গণহত্যার তদন্তে একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পাঠানোর অনুরোধ বিবেচনা করা হবে। খসড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত ওই মিশন র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে আল-ফাশিরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কর্মকাণ্ডে দায়ীদের শনাক্তকরণ কাজ করবে। অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে জাতিসংঘ মানবাধিকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চলমান সংকট নিরসনের উদ্যোগ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক বলেন, এতদিন অনেকে অনেক কথাই বলেছেন আর অনেক কিছুই করেছেন। কিন্তু আদতে কার্যকর পদক্ষেপ ছিল সামান্যই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই নগ্ন নিষ্ঠুরতা, যার মাধ্যমে একটি পুরো জনগোষ্ঠীকে দমন ও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, সেই নৃশংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। সুদানের যুদ্ধ উসকে রাখা এবং এই লড়াই থেকে মুনাফা অর্জনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি কর্দোফান অঞ্চলে বোমাবর্ষণ, অবরোধ ও জোরপূর্বক উচ্ছেদের মতো ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে কঠোর সতর্কবার্তা দেন। ২৬ অক্টোবর আল-ফাশির আরএসএফের দখলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দারফুর অঞ্চলে তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় হয়। সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। পরিষদে পেশ করতে যাওয়া খসড়ার একটি অনুলিপি যাচাই করে রয়টার্স দেখতে পায়, আল-ফাশিরে আরএসএফ ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন এবং যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ধর্ষণের ব্যবহারের অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। শহর থেকে পালিয়ে আসা নারীরা হত্যাকাণ্ড ও সংগঠিত ধর্ষণের কথা জানিয়েছেন। অন্যরা বলেছেন, অসংখ্য বেসামরিক মানুষ ড্রোন হামলায় প্রাণ হারিয়েছেনএবং অনেককে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। তবে খসড়া প্রস্তাবে, একাধিক মানবাধিকার সংস্থার দাবি উপেক্ষা করে আরএসএফকে সমর্থনকারী সম্ভাব্য বহিরাগত পক্ষের ভূমিকা তদন্তের নির্দেশনা রাখা হয়নি। এছাড়া প্রস্তাবে আরএসএফ ও সুদানের সেনাবাহিনীকে দুর্ভিক্ষকবলিত শহরের ভেতরে আটকে থাকা বহু মানুষের কাছে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছাতে অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।