১৯ মার্চ, আল জাজিরা : তিউনিশিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে একাধিক নৌকাডুবির ঘটনায় ১৮টি লাশ উদ্ধার করেছে দেশটির উপকূলরক্ষীরা। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৬১২ জন অভিবাসীকে। তিউনিশিয়ার উপকূলরক্ষী বাহিনী ন্যাশনাল গার্ড বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন। তাদের সবাই সাহারা অঞ্চলের দক্ষিণে অবস্থিত সাব-সাহারান আফ্রিকার অভিবাসী। এসব অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। তিউনিশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় স্ফ্যাক্স উপকূলে গত রবিবার রাতভর একাধিক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল গার্ড।
উদ্ধার অভিযানের পর কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। প্রকাশিত ছবিগুলোতে নারী ও শিশুসহ ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত মানুষদের দেখা গেছে। কয়েকজনের অবস্থা এতটাই আশঙ্কাজনক ছিল যে, দেখে মনে হচ্ছিল তারা মারা গেছেন। আবার কিছু ছবি দেখা গেছে, কেউ কেউ প্রাণপণে ভেসে থাকার চেষ্টা করছেন, বয়া ধরে কোনো রকমে টিকে আছেন। অন্য এক ছবিতে দেখা গেছে, একজন নারী উদ্ধারকারী নৌকায় একটি শিশুকে তোলার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। কিন্তু শিশুটির দেহ নিথর, শক্ত, প্রাণহীন। ন্যাশনাল গার্ড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘‘গোপনে ইউরোপে পৌঁছানোর বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে সফল হয়েছে উপকূলরক্ষীরা।’’
লিবিয়ার পাশাপাশি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপমুখী অভিবাসীদের কাছে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রস্থান পয়েন্ট হয়ে উঠেছে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সংঘাত ছেড়ে উন্নত ভবিষ্যতের আশায় অভিবাসীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। তিউনিশিয়ার স্ফ্যাক্স উপকূল থেকে ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের দূরত্ব মাত্র ১৫০ কিলোমিটার বা ৯০ মাইল। ফলে হাজারো অভিবাসী প্রতিবছর এই রুট ব্যবহার করে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে পোঁছানোর চেষ্টারত অন্তত ২,২০০ জন অভিবাসী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।