আল জাজিরা : ডানপন্থি কর্মী চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। এমন অবস্থায় হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তারা বামপন্থি ‘সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক’ দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তবে সমালোচকরা আশঙ্কা করছেন, এ পদক্ষেপ ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ডানপন্থি কর্মী চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তথাকথিত “বৃহৎ দেশীয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক” ধ্বংসের ঘোষণা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। সোমবার কার্কের নিজস্ব পডকাস্টে এই মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং হোয়াইট হাউসের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার বলেন, “যে সংগঠিত প্রচারণা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের যে ক্ষোভÑ আমরা তা কাজে লাগিয়ে এসব সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক গুঁড়িয়ে দেব। এটা ঘটবেই, আর আমরা তা করব চার্লির নামে।” যদিও তদন্তকারীরা এখনও কার্ক হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য প্রকাশ করেননি, তবু ডানপন্থিদের অনেকেই এর জন্য বামপন্থি মতাদর্শকে দায়ী করছেন। মিলার ও ভ্যান্স দুজনেই দাবি করেন, বামপন্থি উগ্রপন্থি আন্দোলনই মূল হুমকি। আর এবার সেটিকেই টার্গেট করবে প্রশাসন।

ভ্যান্স বলেন, “আমরা সেই এনজিও নেটওয়ার্কের দিকে যাব, যারা সহিংসতা উসকে দেয়, সহায়তা করে এবং তাতে জড়িত থাকে”। তবে পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী একাই হামলা চালিয়েছে বলে তাদের ধারণা। এদিকে কার্ক হত্যার পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের আগেই এমন রাজনৈতিক বক্তব্য সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক সমালোচক আশঙ্কা করছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই সুযোগে ভিন্নমত দমন করতে পারে।

এর আগে গত শুক্রবার দুই দিনের অভিযান শেষে ইউটার ২২ বছর বয়সী টাইলার রবিনসনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হতে পারে। ইউটার গভর্নর স্পেনসার কক্স রোববার জানান, রিপাবলিকান পরিবার থেকে আসা এই যুবক বামপন্থি মতাদর্শ ধারণ করতেন। তবে বিস্তারিত তথ্য দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়েছে। এর পেছনে রাজনৈতিক বিভাজন ও সহজে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়ার সুযোগকে দায়ী করা হচ্ছে।

গত বছর নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্পকে দুইবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ বছরের জুনে মিনেসোটার এক ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা ও তার স্বামীকে মুখোশধারী বন্দুকধারী হত্যা করে। তার আগের মাসে পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শাপিরোর বাড়িতে হামলা হয়। আর সর্বশেষ ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কার্ককে গত বুধবার ইউটার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি প্রভাবশালী ডানপন্থি ছাত্র সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’-এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। গত সোমবার পডকাস্টে ভ্যান্স তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, “তিনি ছিলেন আমার দেখা সবচেয়ে মেধাবী রাজনৈতিক সংগঠক। ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট এবং আমাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করায় তার অবদান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত সাত মাসে আমাদের যে সাফল্য এসেছে, তার বড় অংশই তার প্রচেষ্টার ফল।”