দ্য নিউইয়র্ক টাইমস : ছয় মাসে তৃতীয়বারের মতো ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হোয়াইট হাউজে বরণ করতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্য কোনও বিশ্বনেতা গত ছয় মাসে এত ঘন ঘন হোয়াইট হাউজ সফর করেননি। একাধিক সাক্ষাৎ আসলে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত সম্পর্কের গভীরতাকে তুলে ধরছে। যদিও এই ব্যক্তিগত সম্পর্ক সবসময় দুই দেশের নীতিগত সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হয়নি। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এ খবর জানিয়েছে।
‘আমেরিকা ফার্স্ট’ (যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া) নীতির অধীনে ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্যে হোয়াইট হাউজের প্রধান কৌশলগত মিত্র হিসেবে সমর্থন দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর ফিলিস্তিনপন্থি মনোভাবের ওপর কঠোরতা আরোপ করেছে। তবে, একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেতানিয়াহুর আচরণে হতাশা প্রকাশে অস্বাভাবিকভাবে খোলামেলা ছিলেন ট্রাম্প। বিশেষ করে গত মাসে যখন তিনি ইরান-ইসরাইল সংঘাতকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত করে দুপক্ষকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে আনেন।
চুক্তি কার্যকর হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে লিখেছিলেন,ইসরাইল। বোমাবর্ষণ বন্ধ করো। তোমাদের পাইলটদের এখনই দেশে ফিরিয়ে আনো!
তিনি পরে সাংবাদিকদের কাছে ক্যামেরার সামনে বলেছিলেন যে, ইসরাইল ও ইরান ‘কী যে করছে সেটা তারা নিজেরাই জানে না।
মধ্যপ্রাচ্য নীতি বিষয়ক মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সাবেক উপদেষ্টা ও কার্নেগি এন্ডাউমেন্টের সিনিয়র ফেলো অ্যারন ডেভিড মিলার মিডল ইস্ট আইকে বলেছেন,দুই নেতার সম্পর্ক এখন অনেকটাই স্পষ্ট। নেতানিয়াহু বুঝে গেছেন, যদি তিনি ট্রাম্পের ইচ্ছার পথে বাধা হন, তাহলে চাপ আসবেই।
ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে খামখেয়ালিপনা থাকলেও মিলার বলেছেন, তিনি নেতানিয়াহুকে এমন কিছুর সুযোগ দিয়েছেন যা কোনও ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী আগে পাননি। আর তা হলো ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলা।
তবে, এই প্রশাসন হামাস, হুথি ও ইরান - এই তিন আঞ্চলিক শত্রুদের সঙ্গে সরাসরি কূটনীতিতে জড়িত থাকাকালীন ট্রাম্প ইসরাইলকে একপাশে ঠেলে দিয়েছেন। গত মে মাসে ট্রাম্পের প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফরে মধ্যপ্রাচ্যে গেলেও ইসরাইলে তার কোনও যাত্রাবিরতি ছিল না। এটি অস্বাভাবিক, কারণ দেশটি একাধিক ফ্রন্টে যুদ্ধ করছে এবং এর প্রায় ৭০ শতাংশ অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে।
যদিও বাইডেন প্রশাসন প্রকাশ্যে বলেছিল যে, তারা গাজায় যুদ্ধের প্রথম বছর জুড়ে ইসরাইলীদের ওপর কিছু চাপ বজায় রেখেছিল। ইসরাইলে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত টাইমস অব ইসরাইলকে বলেছিলেন, মৌলিকভাবে, আমরা যা বলেছিলাম তার কিছুই ‘যুদ্ধ বন্ধ করো’ ছিল না।