ব্লুমবার্গ : কোনও বিদেশির আদেশ মানবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা। গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত শুল্ককে ‘অগ্রহণযোগ্য ব্ল্যাকমেইল’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, কোনও গ্রিংগো (বিদেশি বোঝাতে ব্যবহৃত শব্দ, যা ব্রাজিল বাদে সব লাতিন দেশে অসম্মানজনক) এই প্রেসিডেন্টকে আদেশ দিতে পারে না। মার্কিন শুল্ক নিয়ে ব্রাজিলের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ডা সিলভা। তিনি বলেন, গত মে মাসে তারা একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। উত্তরের অপেক্ষায় থেকে আমরা পেয়েছি অগ্রহণযোগ্য একটি ব্ল্যাকমেইল। তারা ব্রাজিলীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হুমকি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের বিষয়ে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ব্রাজিল নিজের মতো করেই নিয়ন্ত্রণ ও কর আরোপ করবে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে টেলিভিশন ও রেডিওতে দেওয়া জাতির উদ্দেশে ভিন্ন এক ভাষণে ডা সিলভা বলেন, ব্রাজিলের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অর্থ শুধু সীমান্ত রক্ষা নয়, বরং বিদেশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের হস্তক্ষেপ থেকেও দেশকে রক্ষা করা। গত সপ্তাহে ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকেই দুই নেতার মতে বাগ্যুদ্ধ আরও তীব্র হয়েছে। দুই ভিন্ন বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিষোদ্গার করা তারই নির্দেশ করে।

মার্কিন শুল্ক আগস্টের শুরুতে কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তাদের সঙ্গে অন্যায্য বাণিজ্য নীতি এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানের কারণে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই শুল্ক আরোপের কয়েকদিন আগে ডা সিলভা বলেছিলেন, ট্রাম্প হচ্ছেন এমন একজন সম্রাট, যাকে বিশ্ব চায় না। শুল্ক ঘোষণার যৌক্তিকতা প্রত্যাখ্যান করে ডা সিলভা এবং তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা ব্রাজিলের সার্বভৌমত্বের ওপর জোর দিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে, ব্রাজিল সরকার সম্ভাব্য পাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে শিল্পগোষ্ঠী ও ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওরো ভিয়েইরা বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত রয়েছেন ডা সিলভা। উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে তারা আলোচনা করবেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডা সিলভার এখনও সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি। উল্লেখ্য, এটি ডা সিলভার তৃতীয় মেয়াদ। ট্রাম্পের প্রতি কড়া জবাব দেওয়ার পর আয়োজিত এক জরিপে দেখা গেছে, জনগণের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।