এপি: মার্কিন ফেডারেল কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে নর্থ ক্যারোলাইনার সবচেয়ে বড় শহর শার্লটে অভিবাসন দমন অভিযান চলছে। শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেককেই গ্রেফতার করতে দেখা গেছে। গত শনিবার এক বিবৃতিতে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সহকারী সচিব ট্রিশিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন নথিহীন অভিবাসীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শার্লটে কর্মকর্তাদের মোতায়েন করছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। তিনি বলেন, “আমেরিকানরা যেন সহিংস অপরাধী, অবৈধ বিদেশিদের কারণে নিজেদের, তাদের পরিবার বা তাদের প্রতিবেশীদের ক্ষতির ভয়ে না থাকে।” “আমরা শার্লটে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাঠাচ্ছি, যাতে আমেরিকানরা নিরাপদ থাকে এবং জননিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন ব্যক্তিদের অপসারণ করা যায়।”
শার্লটে এই অভিযানটি ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন শহরগুলোতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সর্বশেষ অভিবাসন দমন কার্যক্রম। শার্লটের মেয়র ভি লাইয়েলস ও অন্যান্য কর্মকর্তারা এই অভিযানের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই পদক্ষেপগুলো অপ্রয়োজনীয় ভয় ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।কাউন্টি কমিশনার মার্ক জেরেল এবং শার্লট-মেকলেনবুর্গ শিক্ষা বোর্ডের সদস্য স্টেফানি স্নিডসহ সই করা ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা চাই শার্লট ও মেকলেনবুর্গ কাউন্টির মানুষ জানুকÍআমরা সব বাসিন্দার পাশে আছি, যারা শুধু তাদের দৈনন্দিন জীবন চালিয়ে যেতে চায়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ওয়াশিংটন ডিসি-র মতো শহরগুলোতে বড় অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, শার্লট একটি বর্ণগতভাবে বৈচিত্র্যময় শহর, যেখানে ৯ লাখের বেশি মানুষ বাস করেÍএদের মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি বিদেশে জন্মগ্রহণকারী। ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় এ বছর আগস্ট পর্যন্ত শহরে অপরাধের হার কমেছে। কিন্তু আগস্টে শার্লটের লাইট-রেল ট্রেনে ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইরিনা জারুৎসকার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে যে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহরগুলো বাসিন্দাদের সুরক্ষায় ব্যর্থ।বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তাদের টহল ও গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, লস অ্যাঞ্জেলেস ও শিকাগোর মতো শহরে ফেডারেল অভিযান অপরাধ মোকাবিলা ও অভিবাসন আইন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে লাখো অভিবাসীকে বহিষ্কারের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে ও একাধিক মামলা হয়েছে।
নর্থ ক্যারোলাইনার গভর্নর জশ স্টাইনÍএকজন ডেমোক্র্যাট। তবে তার রাজ্য আইনসভায় রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠতা। শুক্রবার তিনি বলেন, এই অভিযানে আটক অধিকাংশ ব্যক্তির কখনো কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই, এমনকি কেউ কেউ মার্কিন নাগরিকও। শার্লটের কর্মকর্তারা জানান, অভিযানের ভয়ে কিছু ব্যবসা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ শার্লটইস্ট-এর নির্বাহী পরিচালক গ্রেগ আসিয়ুট্টো এপিকে ইমেইলে জানান যে, তাদের এলাকার অনেক ব্যবসা বন্ধ ছিল এবং আমরা ভাবছি কীভাবে তাদের টিকিয়ে রাখা যায়, কারণ কতদিন এই পরিস্থিতি চলবে আমরা জানি না। শার্লটের পূর্বাংশে সিটি কাউন্সিল সদস্য জেডি মাজুয়েরা আরিয়াস বলেন, এটি শুধু অভিবাসীদেরই নয়, মার্কিন নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারের বড় ধরনের লঙ্ঘন।