রয়টার্স, সিএনএন , বিবিসি : প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি অর্থবিল কংগ্রেসে প্রাথমিক পর্যায়ে তার দলেরই কয়েকজন আইন প্রণেতা ঠেকিয়ে দিয়েছে। ট্রাম্প নিজেই একে ‘বিশাল, সুন্দর বিল’ হিসেবে প্রচার করে আসছিলেন। আরও ব্যয় কমানোর দাবি করে বিলটির বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটদের সাথে যোগ দিয়ে এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন রিপাবলিকান পাঁচজন। এতে করে ট্রাম্পের বাজেট কাটছাঁট করার যে এজেন্ডা তা প্রাথমিকভাবে বড় ধাক্কা খেল। যদিও ট্রাম্প অনেকবারই আইন প্রণেতাদের এ বিলটি পাশের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘রিপাবলিকান দলে দৃষ্টি আকর্ষক কারও দরকার নেই। কথা বলা বন্ধ করুন এবং এটি সম্পন্ন করুন।’ বিলটি পাশ হওয়ার সম্ভাবনাও একবারেই শেষ হয়ে যায়নি। তবে এবারে প্রাথমিক পর্যায়ে এর ব্যর্থতা এ বছরে ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য প্রথম বড় আঘাত। রিপাবলিকানদের মধ্যে বিলটির সমর্থনের ভিন্ন ভিন্ন দিক আছে। কিছু কট্টরপন্থী বাজেট কাটছাঁটকে এগিয়ে নিতে চান। আবার কেউ কেউ স্বাস্থ্যসেবার মতো কর্মসূচিগুলোতে অর্থ কমানোর বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
যে পাঁচজন রিপাবলিকান এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন তারা বলছেন, হাউজ স্পিকার মাইক জনসন মেডিকএইড কর্মসূচিতে আরও ব্যয় কমানোতে রাজি না হলে তারা এ বিলের বিরোধিতা অব্যাহত রাখবেন। মেডিকএইড নিম্ন আয়ের আমেরিকানদের জন্য নেয়া একটি কর্মসূচি। তাদের নির্বাচনি এলাকার অনেকেই এর ওপর নির্ভরশীল। তারা একই সাথে চান যে ডেমোক্র্যাটদের সময়ে করা ‘পরিবেশ বান্ধব জ্বালানিতে কর অব্যাহতির’ বিষয়টি বাতিলের প্রস্তাব এই বিলে অন্তর্ভুক্ত হোক। ‘এ বিলটি খুব দুর্বল’, বলে মন্তব্য করেন টেক্সাসের রিপাবলিকান চিপ রায়, যিনি বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
অভিবাসী বিতাড়নে যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধকালীন আইন প্রয়োগ স্থগিত : অবৈধ ভেনেজুয়েলীয় অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধকালীন আইন প্রয়োগ করে বিতাড়নে ট্রাম্পের পরিকল্পনা স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শীর্ষ আদালতের আদেশে টেক্সাসে আটক ভেনেজুয়েলার গ্যাং ত্রেন দে আরাগুয়া-র সন্দেহভাজন সদস্যদের বিতাড়ন স্থগিত করা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বড় ধাক্কা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যবহার করতে চাওয়া ১৭৯৮ সালের আইনটি (এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট) যুদ্ধকালীন সময়ে প্রয়োগ করা হতো। এই আইন ব্যবহার করে একজন প্রেসিডেন্ট দ্রুততম সময়ে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারেন।
তবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতিতে না থাকায় এই আইনের ব্যবহার নিয়ে সমালোচনার মধ্যে পড়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। রায়ের পর সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আমাদের অপরাধীদের দেশ থেকে বের করে দিতে দিচ্ছে না।’ এই রায়ের ফলে এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট অনুযায়ী ট্রাম্প প্রশাসন এখনই কোনো অভিবাসীকে বিতাড়ন করতে পারছে না। মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আইন এবং নির্বাহী ক্ষমতা নিয়ে বড় একটি নজির তৈরি করতে পারে।