রয়টার্স: মার্কিন মুলুকে অন্য দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী এবং সংবাদমাধ্যম কর্মীদের জন্য ভিসার মেয়াদ সীমিত করতে চাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির আওতায় গত বুধবার এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। নতুন প্রস্তাবে শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর করার কথা বলা হয়েছে। আর সংবাদমাধ্যম কর্মীদের ক্ষেত্রে চাকরি থাকা সাপেক্ষে ভিসার মেয়াদ বহু বছর পর্যন্ত বৈধ হলেও নতুন প্রস্তাবে সেটা চীনা নাগরিকদের জন্য ৯০ দিন এবং অন্যান্য দেশের জন্য ২৪০ দিন করার প্রস্তাব আনা হয়েছে। অবশ্য, ভিসাধারীরা মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করতে পারবেন বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এফ ক্যাটাগরি, সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রমে আগতদের কাজে সুযোগের জন্য জে ক্যাটাগরি এবং সংবাদমাধ্যম কর্মীদের আই ক্যাটাগরি ভিসা প্রদান করে থাকে। বর্তমান বিধি অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের সময়সীমা বা চাকরির চুক্তি অনুযায়ী এসব ভিসার মেয়াদ নির্ধারিত হয়, যার বিধি অনেকটা নমনীয় হয়ে থাকে। নতুন প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নির্দিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রশাসনের বৈষম্যমূলক প্রস্তাবের তারা তীব্র নিন্দা জানায়। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই পরিবর্তনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ভিসাধারীদের আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
চলতি বছর জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজের মসনদে বসার পর থেকেই কঠোর হাতে অবৈধ অভিবাসী বিতাড়নে নেমেছেন ট্রাম্প। তার সর্বশেষ প্রস্তাব গৃহীত হলে সংশ্লিষ্ট ভিসাধারীরা নমনীয় বৈধ মর্যাদা (লিগাল স্ট্যাটাস) ধরে রাখার সুযোগ হারাতে পারেন এবং মার্কিন মুলুকে অবস্থানে জন্য সেক্ষেত্রে তাদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে হবে। মার্কিন সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (১ অক্টোবর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) এফ ক্যাটাগরিতে ১৬ লাখ, জে ক্যাটাগরিতে তিন লাখ ৫৫ হাজার এবং আই ক্যাটাগরিতে ১৩ হাজার ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। প্রস্তাবিত নীতি নিয়ে আগামী ৩০ দিন জনমত গ্রহণ করা হবে। ২০২০ সালে প্রথম মেয়াদের শেষ দিকেও প্রায় একই প্রস্তাব তুলেছিলেন ট্রাম্প।
৯৬ ভারী ট্রাক দিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতুর সক্ষমতা পরীক্ষা করল চীন
চায়না ডেইলি : চীনের গুইঝৌ প্রদেশে কার্স্ট পাহাড়ের বুকে দাঁড়িয়ে থাকা হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতু সফলভাবে পার করেছে সর্বশেষ নিরাপত্তা পরীক্ষা। ৬২৫ মিটার উচ্চতার এই সেতু উদ্বোধনের পর বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতুর খেতাব পেতে যাচ্ছে। চীনা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত ২১ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন সেতুর চূড়ান্ত ভার বহন পরীক্ষা চালানো হয়। এ সময় ৩ হাজার ৩৬০ মেট্রিক টন ওজনের সমপরিমাণ ৯৬টি ভারী ট্রাক সেতুর ওপর একসঙ্গে রাখা হয়। সেতুর মূল স্প্যান, টাওয়ার, কেবল ও সাসপেন্ডারজুড়ে বসানো হয় ৪০০-রও বেশি সেন্সর, যাতে নড়াচড়ার ক্ষুদ্রতম ইঙ্গিতও ধরা পড়ে। এই পরীক্ষায় সেতুটি উতরে গেছে। প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, কাঠামোগত দৃঢ়তা, শক্তি ও সামগ্রিক কর্মক্ষমতায় সেতুটি প্রত্যাশা অনুযায়ী উতরে গেছে। মোট দৈর্ঘ্যে ২৯০০ মিটার ও মূল স্প্যানে ১৪২০ মিটার বিস্তৃত এই সেতুটি খাঁড়ির পৃষ্ঠ থেকে ৬২৫ মিটার উঁচুতে দাঁড়িয়ে আছে। নির্মাণকাজে প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল কংক্রিট ঢালার সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, খাড়া পাহাড়ের ভূমি ঠিক রাখা এবং প্রবল বাতাসের প্রভাব সামলানো। প্রকল্প ব্যবস্থাপক উ ঝাওমিং জানিয়েছেন, নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করতে সক্ষম হয়েছে দল। সেতুটি সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনের পর লিউঝি থেকে আনলং যাওয়ার দীর্ঘ পথচলা কমে আসবে মাত্র ২ মিনিটে। পাশাপাশি, এই সেতু স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটন খাতকে নতুন গতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০টি সেতুর মধ্যে আটটিই চীনের গুইঝৌ প্রদেশে অবস্থিত।