বিরোধী দলে প্রথম নারী নেতা

এএফপি : অস্ট্রেলিয়ায় ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির নেতা অ্যান্থনি অ্যালবানিজ দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। ২০২৫ সালের ৩ মে সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করার পর গতকাল মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী ক্যানবেরায় গভর্নর জেনারেল স্যাম মোস্টিনের কাছে তিনি ও তাঁর নতুন মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করে। বিশ্লেষকদের মতে, অ্যালবানিজের দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁর সরকারের মূল অগ্রাধিকার হবে জীবনযাত্রার ব্যয় নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ, জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবমুখী মোকাবিলা এবং অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী জনগণের সাংবিধানিক স্বীকৃতি সংক্রান্ত ইস্যুগুলো। অন্যদিকে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লিবারেল পার্টি দীর্ঘদিনের নেতা পিটার ডাটনকে সরিয়ে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রধান হিসেবে একজন নারীকে নির্বাচিত করেছে। তাঁর নাম সুসান লি। তিনি একজন অভিজ্ঞ সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী। তাঁর নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি একটি আধুনিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপে পুনর্গঠিত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।

এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মন্ত্রী এড হিউসিক নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাঁর দাবি, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থানের কারণেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাম মধ্যপন্থী অ্যালবানিজের মন্ত্রিসভা থেকে ডানপন্থী হিউসিক বাদ পড়লেও নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রভাবশালী ডানপন্থী তিন মন্ত্রী টনি বার্ক, জেসন ক্লেয়ার ও ক্রিস বুয়েন্সতাঁদের পদ রক্ষা করেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে লেবার পার্টির মধ্যে মতবিরোধ হতে পারে, এমন আভাসও দিচ্ছে। অপর দিকে বাংলাদেশি অভিবাসী কমিউনিটির কাছে আনন্দের সংবাদ হলো টনি বার্ক আবারও অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাঁর আগের মেয়াদে বাংলাদেশীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দপ্তর দিল্লি থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেছিলেন তিনি। সিডনিপ্রবাসী বাংলাদেশী ও অভিবাসন ইস্যুতে সোচ্চার সৈয়দ আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘টনি বার্ক অভিবাসী কমিউনিটির ভাষা বোঝেন। তাঁর ফিরে আসা, বিশেষ করে বাংলাদেশিদের জন্য আশাব্যঞ্জক।’

অন্যদিকে সুসান লির নেতৃত্বে লিবারেল পার্টির নতুন যাত্রা কতটা কার্যকর হয় এবং আগামী দিনে কতটা প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্যকর হতে পারে, তা নির্ধারণ করবে অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতির ভবিষ্যৎ গতিপথ। এই রাজনৈতিক পালাবদলে বাংলাদেশি অভিবাসী সমাজ যেমন আগ্রহভরে পর্যবেক্ষণ করছে, তেমনি আশাও করছে কিছু বাস্তব পরিবর্তন, যা তাঁদের জীবনযাত্রায় প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলবে। অস্ট্রেলিয়ায় ৩ মে জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ১ কোটি ৮০ লাখ। ৮৩টি দেশে অস্ট্রেলিয়ার কয়েক হাজার নাগরিক ভোট দিয়েছেন।