রয়টার্স , এপি : দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক আইন জারি করাকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে স্থায়ীভাবে অপসারিত হয়েছেন ইউন সুক ইওল। ঘটনার রেশ বজায় থাকা অবস্থাতেই প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হ্রাস করতে সংবিধান সংশোধনের এক প্রস্তাব গতকাল রবিবার উত্থাপন করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার। এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি স্পিকার উউ ওয়োন শিক বলেছেন, জনগণের কাছে আমার প্রস্তাব, আমাদের এখন দ্রুত সংবিধান সংশোধনের পথে এগিয়ে যেতে হবে। অসাংবিধানিক ও অবৈধ সামরিক আইন জারি এবং এর জেরে ইউনের অভিশংসনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর, সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জনমনে কোনও দোটানা থাকার কথা নয়।
নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও সংবিধান সংশোধন নিয়ে গণভোট একসঙ্গে করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। দেশটির বিধি অনুযায়ী, একজন প্রেসিডেন্ট অপসারণের পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
গত শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত ইউনের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের আনা অভিশংসন বহাল রেখে রায় প্রদান করে। ৩ ডিসেম্বর স্বল্প সময়ের জন্য ইউনের সামরিক আইন জারির কারণে দেশটিতে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয়। স্পিকার আরও বলেছেন, আদলতের রায় কয়েক সপ্তাহের বিভ্রান্তির অবসান হয়েছে ঠিকই, কিন্তু প্রেসিডেন্টের চরম ক্ষমতার কারণে ধ্বংসাত্মক সম্ভাবনা এখনও রয়ে গেছে। অনেক মানুষ প্রেসিডেন্টের সম্রাট তুল্য ক্ষমতাকে রাজনৈতিক সংঘর্ষের উৎস বলে মনে করেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হ্রাসে সংবিধান সংশোধনের প্রশ্নে গত মাসে একটি জরিপ চালিয়েছিল গ্যালোপ কোরিয়া। দেখা গেছে, ৫৪ শতাংশ মানুষ সংবিধান সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছেন, বিপরীতে ৩০ শতাংশ মানুষ পুরো বিষয়টিকেই অপ্রয়োজনীয় মনে করেন।
সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে দেশটির সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল। সে সময়ই সরাসরি ভোটে পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পদ্ধতি প্রচলিত হয়। এদিকে, প্রেসিডেন্টের জন্য চার বছরের দুটো মেয়াদ চালু করতে সংবিধান সংশোধনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচনা করে আসছে। তবে ক্ষমতায় যাওয়ার পর কোনও দলই আজ পর্যন্ত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।