রয়টার্স, এএফপি: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চাপে ফেলার কৌশলের অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কর্মকর্তাদের চীন ও ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার এক মার্কিন কর্মকর্তা ও এক ইইউ কূটনীতিক এই তথ্য জানিয়েছেন। চীন ও ভারত রাশিয়ার তেলের অন্যতম প্রধান ক্রেতা। ২০২২ সালে শুরু হওয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে যেতে রাশিয়ার অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে এই দুটি দেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেন, একটি কনফারেন্স কলের মাধ্যমে ট্রাম্প এই দুই দেশের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের অনুরোধ জানান। কনফারেন্স কলে ইইউয়ের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক দূত ডেভিড ও’সুলিভান এবং অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সমন্বয়ের জন্য ইইউ প্রতিনিধিদলটি বর্তমানে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইইউ কূটনীতিক জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিয়েছে, ইইউ যদি এই অনুরোধ মেনে নেয়, তবে তারাও একই ধরনের শুল্ক আরোপ করতে প্রস্তুত।
ওই কূটনীতিক বলেন, ‘তারা মূলত বলছে, আমরা এটি করব, কিন্তু আপনাদেরও আমাদের সঙ্গে এটি করতে হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের এই অনুরোধ মানা হলে ইইউকে তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। কারণ, ইইউ শুল্কের পরিবর্তে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়াকে একঘরে করতে বেশি আগ্রহী। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ বুধবার এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের দৃঢ় বিরোধিতা করে চীন। রাশিয়াবিষয়ক আলোচনায় চীনকে ব্যবহার করারও বিরোধী তারা। ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের অনুরোধের এই খবর প্রথম প্রকাশিত হয় ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে। এর আগেও ট্রাম্প রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনার শাস্তি হিসেবে ভারত ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। ক্রেমলিনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে ট্রাম্প এই গ্রীষ্মে ‘জরিমানা’ হিসেবে ভারতের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছিলেন। তবে তিনি এখনো তার উল্লিখিত আরও কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেননি।
কখনো কখনো ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, ইউরোপ নিজেও রাশিয়া থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়নি। গত বছর ইইউয়ের মোট গ্যাস আমদানির প্রায় ১৯ শতাংশ রাশিয়া সরবরাহ করেছিল। অবশ্য ইইউ রাশিয়ার শক্তির ওপর থেকে নির্ভরতা পুরোপুরি শেষ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, যুক্তরাষ্ট্র আসলে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে পারে। ওই দিন সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি লেখেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত—দুই দেশ বাণিজ্যিক বাধা দূর করতে কাজ করছে। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলার জন্য উন্মুখ।