১৭ মার্চ, রয়টার্স : অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে ডুবোজাহাজের শিগগিরই জোরালো উপস্থিতি নিশ্চিত করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ত্রিপাক্ষিক সামরিক চুক্তি অকাসের আওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা এ খবর জানিয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক ডুবোজাহাজ হস্তান্তর করবে মার্কিন প্রশাসন। ২০২৭ সাল থেকে ইউএসএস মিনেসোটা নামের আমেরিকান ভার্জিনিয়া ক্লাস অ্যাটাক সাবমেরিনগুলো দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় নৌ বহরে যুক্ত হবে।

ডুবোজাহাজের এই বহরের কমান্ডিং অফিসার জেফরি কর্নিয়েলি বলেছেন, ভার্জিনিয়া ক্লাস সাবমেরিন হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন যুদ্ধজাহাজ। অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বছরের মাঝামাঝি সময়ে ৫০ থেকে ৮০ জন মার্কিন নৌ সদস্য তাদের দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় এইচএমএএস স্টারলিং বেইসে উপস্থিত হচ্ছেন। বহরে যুক্ত হতে যাওয়া জাহাজের জন্য ঘাঁটিটি পাঁচশ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে উন্নত করা হচ্ছে। আগামী দুবছরের মধ্যে এই নৌ ঘাঁটি কয়েকশ নৌ কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মীতে গমগম করবে বলে আশা করছেন তারা।

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড স্টেটস স্টাডিজ সেন্টারের পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষা বিভাগের পরিচালক পিটার ডিন বলেছেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের কাছাকাছি এইচএমএএস স্টারলিং ঘাঁটি অবস্থিত। এই অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিকটতম নৌঘাঁটি হাওয়াইতে অবস্থিত। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রবেশগম্যতা সহজতর হবে বিধায় এই ঘাঁটি তাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন, ভারত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিহত করা হোয়াইট হাউজের অন্যতম কৌশলগত অগ্রাধিকার।

চলতি মাসে মার্কিন সিনেটের এক সভায় গোয়েন্দা অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা এলব্রিজ কোলবি বলেছেন, তাইওয়ানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ওই অ্যাটাক সাবমেরিনের কোনও বিকল্প নেই। তাই, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য পূরণের পাশাপাশি অকাস চুক্তির আওতায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিক্রির জন্য সাবমেরিন উৎপাদন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। অকাস সামরিক চুক্তি অস্ট্রেলিয়ার জন্য এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যয়বহুল সামরিক চুক্তি। এর আওতায় আগামী দশকের মধ্যে ইতোমধ্যে ব্যবহৃত ভার্জিনিয়া ক্লাসের দুটো সাবমেরিন ক্রয় করা হবে। এতদিনের ডিজেল চালিত সাবমেরিন বহর প্রতিস্থাপিত করে ব্রিটেনের সহায়তায় পারমাণবিক শক্তিচালিত সম্পূর্ণ নতুন ধরনের সাবমেরিন বহর তৈরি করবে দেশটি। মার্কিন নৌ বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর প্রস্তুতি হিসেবে বর্তমানে ১১৫ জন অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক নৌ প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এছাড়া, আরও ১৩০ জন পার্ল হারবারে পারমাণবিক সাবমেরিন রক্ষণাবেক্ষণের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।