বিবিসি,রয়টার্স : রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানিতে হাঙ্গেরিকে এক বছরের ছাড় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে, রুশ জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, নির্ধারিত সময়ে কোনও সাজার ভয় ছাড়াই আমদানি চালিয়ে যেতে পারবে দেশটি। হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তার বরাতে গত হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের হোয়াইট হাউজে সাক্ষাতের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, অরবানের জন্য অন্য জায়গা থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি করা খুবই কঠিন। তাই দেশটিকে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আছে। ভিক্টর অরবান একদিকে যেমন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র, তেমনি ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে পশ্চিমাদের চক্ষুশূলে পরিণত হওয়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও পুরো সময় সদ্ভাব বজায় রেখেছেন। অরবান বহুদিন ধরে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও রাজনৈতিক সহযোগী হিসেবে পরিচিত। অভিবাসন ও সামাজিক ইস্যুতে ট্রাম্পের রক্ষণশীল বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আসছেন প্রথম থেকেই। এই আনুগত্যই হয়তো তাকে বিশেষ সুবিধা এনে দিয়েছে। গত মাসে রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানিকে কার্যত কালো তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে, যেসব দেশ তাদের সঙ্গে বাণিজ্য করবে, তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয়। হোয়াইট হাউজে বৈঠকের পর হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজিয়ার্তো এক্সে লেখেন, বুদাপেস্টকে রুশ তেল ও গ্যাস সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা থেকে 'পূর্ণ ও সীমাহীন অব্যাহতি' দিয়েছে ওয়াশিংটন।

তবে পরে এক মার্কিন কর্মকর্তা বিবিসিকে নিশ্চিত করেন, ওই অব্যাহতি কেবল এক বছরের জন্য সীমিত। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অরবানের জন্য বড় রাজনৈতিক জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি আগে বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্তে তার দেশের অর্থনীতি ধসে পড়বে। সাক্ষাতের প্রকাশিত আলোচনা থেকে জানা যায়, স্থলবেষ্টিত হওয়ায় রুশ জ্বালানির ওপর হাঙ্গেরির নির্ভরশীলতা অনুধাবন করেছেন ট্রাম্প। তিনি দেশটির অবস্থা বুঝে সহানুভূতি প্রকাশ করেন। অবশ্য, ওই অংশে ছাড়ের বিষয়ে কোনও বক্তব্য ছিল না। কিন্তু পরে স্পষ্ট হয় যে ট্রাম্প এক বছরের জন্য হাঙ্গেরির অব্যাহতি অনুমোদন করেছেন। অথচ মাত্র দুই সপ্তাহ আগে রুশ জ্বালানি কোম্পানি থেকে আমদানি করা নিয়ে অন্য দেশগুলোকে শাস্তির ভয় দেখানো অবস্থানের সঙ্গে নতুন সিদ্ধান্ত পুরোই সাংঘর্ষিক। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হাঙ্গেরি কয়েক শ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন প্রাকৃতিক গ্যাস কিনতে সম্মত হয়েছে।