১৫ মার্চ, রয়টার্স : যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত এবরাহিম রাসূলকে গত শুক্রবার থেকে অবাঞ্ছিত (পারসোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত রাসূলকে একজন বর্ণবাদী রাজনীতিবিদ হিসেবে আখ্যায়িত করে এই ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা এ খবর জানিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে রুবিও বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত আমাদের দেশের আর স্বাগত নন। তার সঙ্গে আলোচনার কিছু নেই। তাই, এই মুহূর্ত থেকে তিনি পার্সোনা নন গ্রাটা (অবাঞ্ছিত ব্যক্তি) হিসেবে বিবেচিত হবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র এক সপ্তাহ আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে নিজের অনুমোদন পত্র পেশ করেন রাসূল। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত হন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে অবস্থিত দক্ষিণ আফ্রিকা দূতাবাসে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে কোনও পক্ষই তাদের অনুরোধে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়নি। অবশ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ বিভাগের মুখপাত্র ক্রিসপিন ফিরি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, রাসূলের বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার যথাযথ কূটনৈতিক মাধ্যমে যোগাযোগ করবে। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারি ভূমি নীতির প্রতি অসন্তোষ জানিয়ে দেশটিতে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। এছাড়া, আন্তর্জাতিক আদালতে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের করায় নাখোশ হয়েছিল হোয়াইট হাউজ। সব মিলিয়ে, ওভাল অফিসের মসনদে ট্রাম্প ফিরে আসার পর থেকেই প্রিটোরিয়া ও হোয়াইট হাউজের সম্পর্কে ভাঙন ধরছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের প্রতি নিজের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, সরকার জোরপূর্বক ভূমি দখল করছে এবং নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির জনগোষ্ঠী বৈষম্যমূলক আচরণের স্বীকার হচ্ছে।
এই দাবির সঙ্গে সুর মিলিয়ে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও দক্ষিণ আফ্রিকা বংশোদ্ভূত ধনকুবের ইলন মাস্ক অভিযোগ করেছেন, দেশটির শ্বেতাঙ্গরা বর্ণবাদী মালিকানা আইনের শিকার হয়ে আসছেন। অবশ্য তারা কেউই নিজেদের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে কোনও প্রমাণ পেশ করেননি। এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা গত জানুয়ারিতে বিতর্কিত একটি বিলকে আইনে পরিণত করেন। ওই আইন অনুযায়ী, জনস্বার্থে সরকারের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের পথ সহজতর হবে, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে সরকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছাড়াই পার পেয়ে যাবে। তবে ওই আইনের সমালোচনার জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গদের দখলে খুব সামান্য ভূমিই আছে। এই সামাজিক বৈষম্য দূর করতেই ওই আইন করা হয়েছে। সরকার এখন পর্যন্ত কোনও ভূমি অধিগ্রহণ করেনি বলেও দাবি করেছেন রামাফোসা।