জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো এক প্রস্তাব পাস না হওয়ায় উত্তেজনা তীব্র হয়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে সদস্যদের মধ্যে ১৪টি ভোট প্রস্তাবের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিলে তা পাশ হয়নি — এটাই গাজা যুদ্ধ চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ ভেটো।

প্রস্তাবে গাজায় সব ধরনের অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান ছিল এবং হামাসসহ সব সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে থাকা বন্দিদের সম্মানজনক ও নিঃশর্ত মুক্তির অনুরোধ করা হয়েছিল।

ডেনমার্কের জাতিসংঘ প্রতিনিধি ক্রিস্টিনা মার্কাস লাসেন বৈঠকে বলেন, গাজায় চলমান খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট এখন “দুর্ভিক্ষ” রূপ নিয়েছে — এটি কোনো ভবিষ্যদ্বাণী নয়, বরং একটি নির্মম বাস্তবতা। তিনি আরও বলেন, বেসামরিক মানুষের দুর্দশা ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছে গেছে এবং তাই এই প্রস্তাব আনা হয়েছে।

ভোটের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপ–বিশেষ দূত মরগান অর্টাগাস দাবি করেন যে হামাসই এই সংঘাত শুরু ও অব্যাহত রাখার মূল কারণ; তিনি বলেন, যদি বন্দিরা মুক্ত করা হয় ও অস্ত্র নেভানো হয়, যুদ্ধ দ্রুত শেষ হতে পারে। তার প্রতিপাদ্য ছিল—যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইসরায়েলের পাশে কূটনৈতিকভাবে দৃঢ়।

ইসরায়েলের জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত ড্যানি দানন বলেন, কিছু আন্তর্জাতিক বিবৃতিতে কাতারের ওপর নিন্দা প্রকাশ তাদের অনুকূলে যায়নি, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনভিত্তিক সম্পর্কের কারণে তারা তা সহ্য করেছে।

গাজা ও কাতারের ঘটনায় চলতি মাসের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের কর্মসূচি বদলে যাচ্ছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়টি বৈশ্বিক কূটনীতির কেন্দ্রে উঠে এসেছে। এ প্রভাব পড়তে পারে উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও অন্যান্য সম্মেলনেও।

সূত্রে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল এ প্রতিক্রিয়া হিসেবে হামলা শুরু করলে আহত ও নিহতের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ে। ইসরায়েলের হিসাব মতে ওই হামলায় প্রায় ১,২০০ জন নিহত ও প্রায় ২৫১ জন বন্দি হয়েছিলেন; প্রতিক্রিয়ার ফলে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী সেখানে লক্ষাধিক নয়—দ্বিতীয়াংশ হিসাবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেসামরিক হতাহত হয়েছে।