আনাদোলু : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড স্থায়ীভাবে দখলের বিষয়ে ইসরাইলকে সতর্ক করে দিয়েছে জার্মানি। মূলত ইসরাইলী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ গাজার তথাকথিত নিরাপত্তা অঞ্চলে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান করার কথা বলার পর জার্মানি ইসরাইলকে সতর্ক করে দিল। এমনকি গাজা ফিলিস্তিনীদের এলাকা বলেও মন্তব্য করেছে দেশটি। গাজা নিয়ে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজের সাম্প্রতিক ঘোষণার পর জার্মানি সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, তারা গাজার স্থায়ী দখল মেনে নেবে না। গত বুধবার বার্লিনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান ওয়াগনার বলেন, “গাজা ফিলিস্তিনীদের অঞ্চল এবং জার্মান সরকার গাজার স্থায়ী দখল ও ফিলিস্তিনীদের স্থায়ীভাবে সেখান থেকে বিতাড়নের কৌশলকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।”

তিনি আরও বলেন, “জার্মান পররাষ্ট্রনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্যে আলোচনার মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানে পৌঁছানো, যাতে ফিলিস্তিনী ও ইসরাইলীরা পৃথক দুটি রাষ্ট্রে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বসবাস করতে পারে।”

ইসরাইল স্পষ্টভাবে গাজা দখলের চেষ্টা করছে : ইসরাইল স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ড গাজা দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছে উত্তর কোরিয়া। পাশাপাশি গাজা উপত্যকাটিতে নতুন করে শুরু করা ইসরাইলী হামলার সমালোচনাও করেছে পিয়ংইয়ং। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরাইলী সেনাবাহিনী গাজায় পুনরায় হামলা শুরুর পর উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় পরিচালিত কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি এই মন্তব্য করেছে।

গত ২ মার্চ থেকে গাজা ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। যার ফলে ত্রাণ ও জরুরি সহায়তাবাহী ট্রাক প্রবেশ বন্ধ হয়ে গেছে উপত্যকাটিতে। খাদ্যাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে ফিলিস্তিনীরা। কেসিএনএ ইসরাইলের ‘এলাকা চুরির উচ্চাকাঙ্ক্ষা’ পোষণের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, দেশটি এখন আর ফিলিস্তিনে আধিপত্য বিস্তারের তার উদ্দেশ্য গোপন করছে না। যুদ্ধ শেষে গাজা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে ইসরাইলকে গাজা সম্পূর্ণ দখলের নির্দেশ দেওয়ার জন্য।

এতে বলা হয়েছে, মার্কিন-সমর্থিত ইসরেইলের ‘বেপরোয়া’ সামরিক পদক্ষেপ স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা ধ্বংসের জন্য কারা দায়ী। কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ ১৫ মাসের যুদ্ধের পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি। এটি ছিল তিন পর্বের। প্রথম পর্বে ছিল যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি-বন্দি বিনিময় শুরু করা, দ্বিতীয় পর্বে ছিল জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের কাজ শেষ করা এবং গাজা থেকে ইসরাইলী সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, তৃতীয় পর্বে ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে পুনর্গঠন। তবে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ না করে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। ইসরাইলের ফের শুরু করা এই হামলায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।