ব্লুমবার্গ, মিডল ইস্ট আই: সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা জোলানি জানিয়েছেন, ‘সঠিক পরিস্থিতি’ তৈরি হলে তার দেশ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে এবং আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দিতে প্রস্তুত। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কোরি মিলস সিরিয়া সফরে যান। দামেস্কে জোলানির সঙ্গে তার ৯০ মিনিটের বৈঠক হয়। ব্লুমবার্গকে মিলস জানান, এই বৈঠকে সিরিয়ার ওপর থাকা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শিথিলের জন্য কী কী পদক্ষেপ দরকার, তা নিয়ে আলোচনা হয়। মিলস বলেন, জোলানিকে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘আসাদের রেখে যাওয়া রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করতে হবে, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে অংশ নিতে হবে এবং হায়াত তাহরির আল-শাম নামের যোদ্ধাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জোলানিকে ইসরাইলকে আশ্বস্ত করতেও হবে।’ আসাদ ক্ষমতা হারানোর পর থেকে ইসরাইল নিয়মিতভাবে সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্বত্য এলাকা দখল করে সেখানে অবস্থান করছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। জোলানির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই ইসরাইলি দখল এবং দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি। দেশটির বেশিরভাগ মানুষ এখন দরিদ্রতায় দিন কাটাচ্ছেন। যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে। যদিও জোলানির নেতৃত্বে একটি অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হয়েছে, তারপরও নিষেধাজ্ঞা তুলতে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশ ও তুরস্কের মতো সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে আছে। তবে কিছুটা হলেও অগ্রগতি হয়েছে। মার্চে রয়টার্স জানিয়েছিল, কাতারকে সিরিয়ায় প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আরও একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, সৌদি আরব সিরিয়ার বিশ্বব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করবে, যাতে প্রাথমিক পুনর্গঠনের জন্য অর্থ পাওয়া যায়। মিলস জানান, জোলানি তার সঙ্গে একটি চিঠি দিয়েছেন যা ট্রাম্পের কাছে পৌঁছাবে। এই বৈঠক মধ্যপ্রাচ্যের পাল্টে যাওয়া বাস্তবতার দিকটিও তুলে ধরেছে। জোলানি একসময় আল-কায়েদায় যোগ দিয়ে ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়েছেন। সেই সময় কোরি মিলস ছিলেন একজন সেনা স্নাইপার। ব্লুমবার্গকে মিলস বলেন, ‘আমি জোলানিকে বলেছি, আমি একজন সৈনিক হিসেবে একজন সৈনিকের সঙ্গে কথা বলছি।’