DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

এশিয়া

স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রস্তুত ইসরাইল

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা নিয়ে মিশরে আরব নেতাদের সম্মেলন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার কায়রোতে আরব লীগের একটি জরুরি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

Printed Edition
israel-

৪ মার্চ, আরব নিউজ, টাইমস অব ইসরাইল : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার কায়রোতে আরব লীগের একটি জরুরি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মিশর কর্তৃক আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনের লক্ষ্য হল গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং ফিলিস্তিনীদের পুনর্বাসনের ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখানো, পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি শেষ করে গাজায় পুনরায় শত্রুতা শুরু করার বিষয়ে ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের প্রতিও আলোকপাত করা। শীর্ষ সম্মেলনে ফিলিস্তিনীদের অধিকার রক্ষা এবং গাজাকে আবার বসবাসের উপযোগী করে তোলার জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ আরব প্রতিক্রিয়া তৈরির উপর আলোকপাত করা হবে। মিশর এখনও তাদের প্রস্তাবের সম্পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করেনি। তবে সাবেক মিশরীয় কূটনীতিক মোহাম্মদ হেগাজি তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে তিনটি প্রযুক্তিগত পর্যায়ে একটি পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছেন।

ছয় মাস স্থায়ী প্রথম পর্যায়ে দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং ধ্বংসাবশেষ অপসারণের উপর দৃষ্টি দিতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত পুনর্গঠন পরিকল্পনা এবং অবকাঠামো পুনরুদ্ধারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

চূড়ান্ত পর্যায়ে আবাসন এবং পরিষেবার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি ইসরাইলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন নিয়ে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের জন্য একটি রাজনৈতিক পথ প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিশেষজ্ঞরা পরিকল্পনার অর্থায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, জাতিসংঘ গাজা পুনর্র্নিমাণের ব্যয় ৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হবে বলে অনুমান করেছে। এদিকে ফিলিস্তিনী অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে রাজি আছে ইসরাইল। গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন দখলদার ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সা’র। জেরুজালেমে আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে দখলদার এ মন্ত্রী জানান, এক্ষেত্রে তাদের পূর্ব শর্ত হলো হামাসকে ইসরাইলের সব পণবন্দীকে মুক্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে গাজাকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে।

গত রোববার হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হয়। এরপর ওইদিন গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা ও পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেন ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এতে করে গাজাবাসীর আবারও অভুক্ত থাকার শঙ্কা দেখা দেয়।

তবে ইসরাইলী পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, এই পণ্যগুলোর মাধ্যমে হামাস অর্থ আয় করছে। এবং বর্তমানে তাদের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস হলো মানবিক সহায়তা। হামাসের আয় বন্ধ করতেই গাজায় পণ্য সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে বলে এটির বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। যদিও যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো অঞ্চলে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য প্রবেশ বাধা দেয়া যুদ্ধাপরাধের সামিল। ইসরাইলী মন্ত্রী বলেন, “গাজায় হামাসের আয়ের এক নাম্বার উৎসে পরিণত হয়েছে মানবিক সহায়তা। এসব অর্থ দিয়ে তারা তাদের সক্ষমতা পুনর্গঠিত করার চেষ্টা করছে এবং অনেক তরুণকে দলে নিচ্ছে।” এদিকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়া, এরপর মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়া- এসব বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন গাজাবাসী। তাদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে গাজায় হয়ত আবারও বর্বরতা শুরু করতে পারে ইসরাইলী বাহিনী।