তহবিল দিতে ইইউ’র রুশ সম্পদ ব্যবহারের পদক্ষেপ ব্যর্থ

ইউক্রেনের জন্য বিশাল আকারের ঋণ প্রদানের জন্য রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহারের দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নেতারা প্রথম পদক্ষেপ নিলেও ব্রাসেলসে ম্যারাথন আলোচনাটি স্পষ্ট সবুজ সংকেত দিতে ব্যর্থ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মস্কোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিয়েভকে টিকিয়ে রাখতে ও ক্রেমলিনকে অর্থ প্রদান করতে তথাকথিত ‘ক্ষতিপূরণ ঋণ’ আলোচনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে স্থান পায়। তবে আইনি ও রাজনৈতিক জটিলতা থাকায় শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বেলজিয়ামের আপত্তির কারণে বাতিল করতে হয়েছে।আইনি ও রাজনৈতিক জটিলতা এড়াতে ইউরোপীয় কমিশন একটি জটিল পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ইউরোপীয় কমিশন জানায়, আগামী কয়েক বছরে কিয়েভকে ১৪০ বিলিয়ন ইউরো বা ১৬২ বিলিয়ন ডলার হস্তান্তর করা যেতে পারে। তবে এখানে এর ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে।২০২২ সালে মস্কোর ট্যাঙ্ক ইউক্রেনে ঢোকার পর ইইউ রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ২শ’ বিলিয়ন ইউরোর সম্পদ জব্দ করে। যার বেশিরভাগই বেলজিয়ামে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আমানত সংস্থা ইউরোক্লিয়ারে জমা আছে।জি-৭ দেশগুলো ইতোমধ্যেই ইউক্রেনের জন্য ৫০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ তহবিল তৈরির জন্য হিমায়িত সম্পদের সুদ ব্যবহার করেছে।কিন্তু রাশিয়ার যুদ্ধ চার বছর ধরে চলতে থাকায় এবং ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সমর্থন কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিয়েভের সমর্থকরা এখন তার বাজেটকে আরো শক্তিশালী করতে আরো এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।যদিও ইইউ’র ক’টি দেশ রাশিয়ার সম্পদ সরাসরি জব্দ করার আহ্বান জানালেও এটি অনেকের জন্য একটি লাল রেখা।এই বিষয় এড়াতে, ইউরোপীয় কমিশন, ইইউ-এর নির্বাহী, একটি আর্থিক পরিবর্তনের প্রস্তাব দেয়। তারা জোর দিয়ে বলেছে, রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদকে স্পর্শ করবে না।পরিবর্তে, প্রস্তাবের অধীনে ইইউ ইউরোক্লিয়ার গ্রুপ তহবিল থেকে ধার করে যা নগদে পরিণত হয়েছে। সেই অর্থ পরবর্তীতে ইউক্রেনকে ঋণ দেওয়া হবে। কিয়েভ কেবল তখনই ঋণ পরিশোধ করবে যখন রাশিয়া ইউক্রেনকে ক্ষতিপুরণ দেওয়ায় ইচ্ছা পোষণ করবে।প্রকল্পটি ইইউ’র ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের ‘সম্পূর্ণ গ্যারান্টি’ পাবে যদি তারা অবশেষে সিদ্ধান্ত নেয় যে রাশিয়া ক্ষতিপূরণ না দিয়ে সম্পদ পুনরুদ্ধার করতে পারে। বিবিসি।

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। জাতীয় ভূকম্পবিদ্যা কেন্দ্র (এনসিএস) জানায়, শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ০৯ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ৮০ কিলোমিটার।তবে প্রাথমিকভাবে এ ভূমিকম্পে হতাহত বা কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।এর আগে, গত মঙ্গলবার ভোরে আফগানিস্তানে ৪.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এছাড়াও, গত ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় উত্তর আফগানিস্তানে ৫.৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে, যা এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দেশটিতে আঘাত হানা চতুর্থ ভূমিকম্প এবং ১২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আঘাত হানা দ্বিতীয় ভূমিকম্প। ইকোনমিক টাইমস।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বৈঠক থেকে যে তিন সিদ্ধান্ত এলো

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সবচেয়ে বড় প্রতিনিধি সম্মেলন বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই বৈঠকে চোখ ছিলো বিশ্ব নেতাদের। পার্টির সাধারণ সম্পাদক শি জিনপিংয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে চীনের আগামী পাঁচ বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে।এই বৈঠকে তিনটি বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। প্রথমত, পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যে সংখ্যক প্রতিনিধি অনুপস্থিত ছিলেন, তা দেখে চীনা বিশ্লেষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। ২০৫ জন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের মধ্যে মাত্র ১৬৮ জন উপস্থিত ছিলেন। একজন মারা গেছেন এবং ১০ জনকে ইতোমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু বাকি ২৬ জন অনুপস্থিত সদস্য কোথায় গেলেন?এই বিশাল অনুপস্থিতির কারণে জল্পনা চলছে, দেশটির দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গোপনে আরও অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে। সামরিক বাহিনীর ক্ষেত্রে চিত্রটি আরও স্পষ্ট, ৩৩ জনজেনারেলের মধ্যে ২২ জনই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বরখাস্ত হওয়া আটজন জেনারেলও আছেন।

সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী হি উইডংয়ের বহিষ্কারসহ বৈঠকের আগেভাগে পার্টির অভ্যন্তরে বড় ধরনের শুদ্ধি অভিযান সম্পন্ন করা হয়। এটি শি জিনপিংয়ের ক্ষমতার দৃঢ়তা নাকি অনিরাপত্তা প্রকাশ করে, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মতভেদ আছে। তবে দুর্নীতি দমন অভিযান যে থামছে না, তা নিশ্চিত। পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কোনো ‘সমাপ্তি রেখা’ আপাতত টানা হচ্ছে না। জিনপিংয়ের বহুল ব্যবহৃত স্লোগান ‘নতুন গুণগত উৎপাদনশীল শক্তি’র মাধ্যমে মূলত দেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিদেশি নির্ভরতা কমাতে বেসরকারি খাত, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং সামরিক বাহিনীর অংশীদারিত্বে উন্নত, দেশীয় প্রযুক্তির বিকাশের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।তৃতীয়ত, মার্কিন শুল্ক আরোপের কারণে চীন তার রফতানি বাজার বড় ধাক্কা খেয়েছে। দেশের অর্থনীতি এখনো রফতানির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য চীন দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতিকে রফতানিমুখিতা থেকে অভ্যন্তরীণ ভোগের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে, দেশটি বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজারের দিকে মনোযোগ দিতে চাইছে। বিবিসি