ইনডিপেন্ডেন্ট উর্দু, ডয়চেভেলে উর্দু : ইসলামের ইতিহাসের অমর বীর মুহাম্মদ বিন কাসিম। মাত্র ১৭ বছর বয়সে সিন্ধু জয় করেন। তার সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমেই দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলমানদের আগমনের সূচনা হয়। মুহাম্মদ বিন কাসিমের বয়স যখন মাত্র ১৬ কিংবা ১৭। এ সময় সিন্ধুর রাজা দাহির আরব বণিকদের বাণিজ্য কাফেলা লুট করেন।

মুহাম্মদ বিন কাসিম সম্মিলিত বাহিনী নিয়ে রাজা দাহিরের দেবাল জয় করেন। সিন্ধু অঞ্চল জয়ের পর মুহাম্মদ বিন কাসিম সুক্কুর জেলার অরোরায় একটি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সংস্কারের অভাবে ঐতিহাসিক মসজিদটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। মেরামতের অভাবে মসজিদটির বেশিরভাগ অংশই ভেঙে পড়েছে। এখনো মসজিদের মূল অবকাঠামোর কিছু ধ্বংসাবশেষ অক্ষত রয়েছে।

পবিত্র রমজান মাসে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন। বিভিন্ন সময়ে মসজিদটি পুনর্র্নিমাণের জন্য অনেক প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল, কাজ শুরু হয়েছিল, কিন্তু অনিবার্য কারণে কাজ সমাপ্ত হয়নি। মুহাম্মদ বিন কাসিম মসজিদের খতিব মাওলানা নবী বখশ ভাট্টি ১৪ বছর ধরে এই মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বলেন, এই মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করা হয় ৯৩ হিজরি অর্থাৎ ৭১২ খ্রিস্টাব্দে। মসজিদে দৈনিক পাঁচবার জামাতে এবং শুক্রবারের নামাজ আদায় করা হয়, পাশাপাশি শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষাও দেওয়া হয়। তিনি বলেন, মসজিদের মূল অবকাঠামো এখন আগের মতো নেই। তবে এখনো কয়েকটি ধ্বংসাবশেষ অবশিষ্ট আছে। সিন্ধুর স্থানীয় সংস্থা ফিকর-ও-নজর নিয়মিত মসজিদের যত্ন নিচ্ছে। তারা মসজিদের উঠোনের উপরে একটি ছাদ এবং দেয়াল নির্মাণ করেছে।

৭০ বছর বয়সী মসজিদের ইমাম নবী বখশের বলেন, তিনি এই এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছেন এবং প্রথম দিন থেকেই মসজিদটিকে এই অবস্থায় দেখছেন। তার মতে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে মসজিদটি পরিদর্শন করেছেন এবং মসজিদটি পুনর্র্নিমাণের ঘোষণাও দিয়েছেন, কিন্তু কার্যক্রম কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। মাওলানা নবী বখশ বলেন, যখন সারা দেশ থেকে পর্যটকরা এখানে আসেন এবং এর জরাজীর্ণ অবস্থার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন, তখন তিনি খুব বিব্রত বোধ করেন। সিন্ধুর প্রখ্যাত সাংবাদিক ও গবেষক মমতাজ বুখারি মসজিদ সম্পর্কে জানিয়েছেন, যখন অরোরা দুর্গ জয় করা হয়, তখন এর দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়। তারপর এর ইট দিয়ে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়।