আফগান মন্ত্রীর প্রথম ভারত সফর
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় থাকা আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এক সপ্তাহের সফরে ভারতে পৌঁছেছেন। ২০২১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর প্রত্যাহারের পর তালেবান ক্ষমতা দখল করে। তার পর এই প্রথম কাবুলের কোনো শীর্ষ নেতার নয়াদিল্লি সফর এটি।
দিল্লিতে অবস্থানকালে আফগান মন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। কাবুল সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে নয়াদিল্লির এই উদ্যোগ ইসলামাবাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছেও বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
তবে এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য সাউথ ব্লক যখন প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন ভারতীয় কর্মকর্তাদের সামনে কূটনৈতিক দ্বিধাও দেখা দিয়েছে। কূটনৈতিক প্রোটোকল অনুযায়ী, অতিথি নেতার দেশের পতাকার সঙ্গে ভারতের পতাকা রাখতে হয়; ছবি তোলার সময় বা টেবিলের পেছনে।
কিন্তু ভারত এখনও তালেবান শাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। তাই তালেবান পতাকাকে নয়াদিল্লি সরকারি মর্যাদা দিতে নারাজ। বর্তমানে নয়াদিল্লির আফগান দূতাবাসে এখনও আফগানিস্তান প্রজাতন্ত্রের পুরোনো পতাকা উড়ছে।
অতীতে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুত্তাকির বৈঠকে কাবুল তালেবান পতাকা ব্যবহার করলেও ভারত ভিন্ন পথ নিয়েছিল। যেমন, চলতি বছরের শুরুতে দুবাইতে বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে মুত্তাকির বৈঠকে কোনো দেশের পতাকাই ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু এইবার যেহেতু বৈঠক হচ্ছে দিল্লিতে, তাই প্রোটোকল মেনে পতাকার বিষয়টি দিল্লির কর্মকর্তাদের জন্য এক নতুন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
ঐতিহাসিকভাবে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলেও ২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর নয়াদিল্লি কাবুলের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। তবে, এক বছর পর বাণিজ্য, চিকিৎসা এবং মানবিক সহায়তার জন্য একটি ছোট মিশন ফের চালু করা হয়।
ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি না দিলেও দুই দেশের সম্পর্ক বরফ গলাতে আলোচনা শুরু হয়েছে। মুত্তাকির এই সফর সেই সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি বাগরাম বিমান ঘাঁটি হস্তান্তরের জন্য ট্রাম্পের দাবিকে কেন্দ্র করে ভারত, রাশিয়া, চীন এবং আরও সাতটি দেশের সঙ্গে একযোগে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে। ওই দেশগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে আফগানিস্তানের সক্রিয় আঞ্চলিক সংযোগকে সমর্থন করেছে। নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বরাবরই আফগান ভূমিকে কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার না করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এনডিটিভি।
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ফিলিপাইন
ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলীয় একটি শহরের কাছে গতকাল বৃহস্পতিবার আঘাত হেনেছে ৪.৮ মাত্রার ভূমিকম্প। লাখ লাখ লোক বসবাস করে শহরটিতে। রাজ্যের ভূকম্পবিদরা প্রাকৃতিক এই দুর্যোগটিতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে সংঘটিত অগভীর ভূমিকম্পের পর শহরের কর্মচারীরা অফিস ভবন থেকে বেরিয়ে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দারা টেলিফোনে এএফপিকে জানিয়েছে, মধ্য ফিলিপাইনে ভূমিকম্পে ৭০ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যুর ১০ দিন পর এ ভূমিকম্পটি ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি সর্বশেষ সংঘটিত এই ভূমিকম্পে। বিবিসি
আফগানিস্তানে এবার সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা
আফগানিস্তানে কিছু সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দেশটির যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুকম,ইনস্টাগ্রাম এবং এক্সসহ কিছু প্ল্যাটফর্মের নির্দিষ্ট ধরনের কনটেন্ট সীমিত করতে ফিল্টার প্রয়োগ করা হয়েছে।
তবে কী ধরনের পোস্ট ফিল্টারের আওতায় পড়ছে তা স্পষ্ট নয়। কাবুলের কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা এখন আর তাদের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে ভিডিও দেখতে পাচ্ছেন না, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকসেস করতেও সমস্যা হচ্ছে।
আফগানিস্তান জুড়ে দুই দিনের জন্য ইন্টারনেট ও টেলিকম পরিষেবা বন্ধের ঘটনার এক সপ্তাহ পরে এ কনটেন্ট নিষেধাজ্ঞা এলো।
ইন্টারনেট-টেলিকম বন্ধের কারণে নাগরিকরা ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েছিলেন। পরে এসব সেবা চালু হলে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বিবিসি বলছে, ৪৮ ঘণ্টার ওই ব্ল্যাকআউটে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়, জরুরি সেবার সুযোগ সীমিত হয়ে যায় এবং নারী ও কন্যাশিশুদের আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।
তালেবান সরকারের এক সূত্র বলছে, ‘ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং এক্সের মত প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট ধরনের কন্টেন্ট সীমিত করতে কিছু নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হয়েছে।’
এ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তালেবান সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
পূর্বাঞ্চলের নঙ্গরহার প্রদেশের একটি সরকারি দপ্তরে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান, তিনি ফেইসবুক খুলতে পারলেও ছবি দেখতে কিংবা ভিডিও চালাতে পারছেন না।
এর আগে গত সপ্তাহে যে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট করা হয়েছিল তা নিয়ে তালেবান সরকার কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। তবে গত মাসে উত্তরাঞ্চলীয় বালখ প্রদেশের তালেবান গভর্নরের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘অনৈতিক কার্যকলাপ প্রতিরোধে’ ইন্টারনেট ব্লক করা হচ্ছে।