বিশেষ ট্রেনে করে সীমান্ত পেরিয়ে চীন গেলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন চীনের রাজধানী বেইজিং পৌঁছেছেন। আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘ভিক্টরি ডে’ সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিতে তিনি বিশেষ সাঁজোয়া ট্রেনে চীন সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। এই তথ্য জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থা।কুচকাওয়াজে কিম জং উন ছাড়াও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং অন্যান্য বিশ্বনেতারা উপস্থিত থাকবেন। এটি কিমের প্রথম কোনো বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক সভায় অংশগ্রহণ।কিমের সাঁজোয়া ট্রেনটি অত্যন্ত বিলাসবহুল এবং উচ্চ নিরাপত্তা-সংবলিত। ট্রেনটিতে রয়েছে বিলাসবহুল খাবার পরিবেশনকারী রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স রুম, অডিয়েন্স চেম্বার এবং শয়নকক্ষ। নিরাপত্তার কারণে ট্রেনটি ধীরে চলে, যার ফলে যাত্রায় সময় লাগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা।এটি ১৯৫৯ সালের পর প্রথমবারের মতো যে, কোনো উত্তর কোরীয় নেতা চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছেন। কিম ছাড়াও মিয়ানমার, ইরান, কিউবাসহ ২৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এই কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছেন।২০১৫ সালে কিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চোয়ে রিয়ং হে পিয়ংইয়ং থেকে কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন। বহির্বিশ্বে কিমের সফর সাধারণত বিরল এবং কেবলমাত্র বিশেষ আন্তর্জাতিক সমঝোতার সময়েই তিনি বিদেশ সফরে যান।২০১৯ সালে চীন সফরের সময়ও কিম সাঁজোয়া ট্রেনে গিয়েছিলেন, যা ছিল চীন-উত্তর কোরিয়া কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তির উপলক্ষে। বিবিসি।
গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়
গ্রিনল্যান্ডকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দাবির প্রেক্ষিতে কড়া বার্তা দিয়েছে ফ্রান্স। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারো স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়।’ ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড সফর শেষে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।ইউএসের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করা হচ্ছে, তবে ফ্রান্স এই দাবির বিরোধিতা করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (পুরনো টুইটার) ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারো লেখেন, ‘বিশ্বের ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং আর্কটিক অঞ্চলে শক্তি প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাÍএ পরিস্থিতিতে ফ্রান্স পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে : গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়, এটি দখলের জন্যও নয়।’ব্যারো আরও বলেন, ‘ফ্রান্স হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম দেশ, যারা ২০২৬ সালের শুরুতে গ্রিনল্যান্ডে একটি কনস্যুলেট খুলবে। এছাড়া, পার্টনারশিপ ডায়ালগ কমিটি গঠন করে সহযোগিতা আরও জোরদার করা হবে। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড একটি ইউরোপীয় ভূখণ্ড। প্রতিবেশীদের অধীনস্ত করে কোনো জাতির গৌরব গড়া যায় না। গ্রিনল্যান্ড এবং ডেনমার্ক একা নয়, ফ্রান্স ও ইউরোপ তাদের পাশে থাকবে, এখন এবং ভবিষ্যতেও।’ব্যারোর এই সফরের আগে, গত বুধবার ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিলেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন নাগরিক গ্রিনল্যান্ডে প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।ডেনিশ সম্প্রচারমাধ্যম ডিআর গত সপ্তাহে জানিয়েছে, অন্তত তিনজন মার্কিন নাগরিক গ্রিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছেন। এই তিন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এপি নিউজ, ফ্রান্স২৪ ও আনাদোলু এজেন্সি।
১৪ বছর পর ফের তেল রপ্তানি শুরু করল সিরিয়া
দীর্ঘ ১৪ বছর পর আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে তেল রপ্তানি শুরু করেছে সিরিয়া। সোমবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় তারতুস বন্দর থেকে ৬ লাখ ব্যারেল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এক সিরিয়ান কর্মকর্তা, যিনি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।তেলটি রপ্তানি করা হয়েছে বি সার্ভ এনার্জি নামে একটি গ্লোবাল ওয়েল ট্রেডিং ফার্মের কাছে। সিরিয়া ২০১০ সালের পর প্রতিদিন ৩ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করলেও, ২০১১ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ এর বিরুদ্ধে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ এবং পরবর্তী মার্কিন ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার কারণে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায়, দেশটি পুনরায় আন্তর্জাতিক তেল বাণিজ্যে যুক্ত হতে সক্ষম হয়েছে। সিরিয়ান তেলক্ষেত্রের বেশিরভাগই কুর্দি নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে তেল উত্তোলনের কাজ চলছে।এটি সিরিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, তবে আন্তর্জাতিক মহলে সিরিয়ার তেল রপ্তানির বিষয়টি এখনও বিতর্কিত। রয়টার্স।