এশিয়া
মাটির নিচে ২৫ হাজার বছরের পুরোনো পিরামিডের সন্ধান
পিরামিড বলতেই প্রথমেই আসে মিশরের কথা। মাটির গভীরে লুকিয়ে থাকা রহস্যের অপার খনি হিসেবে পরিচিত এই স্থাপত্য। তবে বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো পিরামিড নাকি মিশরে
Printed Edition
২ মার্চ, আল-আরাবিয়া, ডয়েচে ভেলে, এনবিসি নিউজ, টাইমস অব ইসরাইল : পিরামিড বলতেই প্রথমেই আসে মিশরের কথা। মাটির গভীরে লুকিয়ে থাকা রহস্যের অপার খনি হিসেবে পরিচিত এই স্থাপত্য। তবে বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো পিরামিড নাকি মিশরে নয়, বরং ইন্দোনেশিয়ায়! দেশটির মাটির নিচে ২৫ হাজার বছরের প্রাচীন এক পিরামিডের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা মিশরের পিরামিডগুলোর তুলনায় অনেক পুরোনো বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা।
ন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন এজেন্সির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য। ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ভূতত্ত্ববিদদের একটি বিশেষ গবেষক দল ইন্দোনেশিয়ার একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে অভিযান চালায়। দীর্ঘ গবেষণা শেষে তারা জানান, সেখানে পাওয়া স্থাপত্যটি বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো মেগালিথিক (একাধিক বিশালাকারের পাথর দিয়ে তৈরি) স্থাপনা হতে পারে।
গুনুং পাডাং: এক রহস্যময় স্থাপত্য: গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার এই পিরামিডটির নাম ‘গুনুং পাডাং’। স্থানীয় বাসিন্দারা একে ‘পান্ডেন বেরুনডাক’ নামে ডাকেন, যার অর্থ ‘ধাপে ধাপে ওঠা পিরামিড’। প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, এই স্থাপত্যটি এতদিন একটি পাহাড় হিসেবে পরিচিত ছিল, স্থানীয় অধিবাসীরা জানতেন না যে এটি আসলে একটি প্রাচীন পিরামিড। মাত্র এক দশক আগে প্রত্নতত্ত্ববিদরা এই অঞ্চলে গবেষণা শুরু করেন।
বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো পিরামিবিশেষজ্ঞদের মতে, গুনুং পাডাং পিরামিডটি মিশরের পিরামিড কিংবা স্টোনহেঞ্জের চেয়েও পুরোনো। তবে সম্প্রতি গবেষকদের একাংশ এই দাবির বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পিরামিডটি আগ্নেয় পাথরের তৈরি পাহাড়ের গা কেটে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি তুষার যুগের শেষ দিকে তৈরি হয়। পিরামিডের মূল অংশটি বিশাল অ্যান্ডেসাইট লাভা দিয়ে নির্মিত। প্রথমে এটি একটি প্রাকৃতিক লাভা পাহাড় ছিল, পরে সেটিকে কেটে ভাস্কর্যের রূপ দেওয়া হয় এবং ধাপে ধাপে একটি স্থাপত্য হিসেবে গড়ে তোলা হয়। গবেষকদের মতে, গুনুং পাডাংয়ের নির্মাণকাল বেশ দীর্ঘ ও বহুরূপী। তারা জানিয়েছেন পিরামিডের কেন্দ্রস্থল নির্মিত হয় আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ২৫ হাজার থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৪ হাজার বছরের মধ্যে। এরপর এটি দীর্ঘ সময় পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ৭৯০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৬১০০ সালের মধ্যে নতুন করে নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়। চূড়ান্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১১০০ সালের মধ্যে। বর্তমানে দৃশ্যমান অংশটি মূলত এই শেষ পর্যায়ে নির্মাণ করা হয়েছে।