ইন্টানরনেট: আবারও নিরাপত্তা ইস্যুতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। এবার বিদেশ সফরের প্রসঙ্গে সিআরপিএফ সরাসরি অভিযোগ তুলেছে যে, রাহুল একাধিকবার নির্ধারিত প্রোটোকল মানেননি এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এ বছর ইতালি, ভিয়েতনাম, দুবাই, কাতার, লন্ডন ও মালয়েশিয়ার সফরে একই চিত্র দেখা গেছে। প্রত্যেকবারই কেন্দ্রের আধাসেনা নাকি রাহুলের আচরণে অসন্তুষ্ট হয়েছে। নিরাপত্তা শৃঙ্খলা ভঙ্গের এমন অভিযোগ বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এই প্রথম নয়। ২০২২ সালের ভারত জোড়ো যাত্রার সময়ও অভিযোগ উঠেছিল তিনি নিরাপত্তা বলয় ভেঙে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেদিক থেকে দেখলে রাহুল বারবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর চোখে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে রয়েছে আরও বড় উদ্দেশ্য। কারণ সংসদে বা রাজনীতির ময়দানে রাহুল যে ভাবে বিজেপিকে আক্রমণ করছেন, তার প্রেক্ষিতে তাকে ঘিরে এই ধরনের অভিযোগ কেন্দ্রের জন্য সুবিধাজনক।

একদিকে নিরাপত্তার কথা বলে তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে, অন্যদিকে জনগণের কাছে বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে বিরোধী দলনেতা নিজেই নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এই দুই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক লাভবান হবে শাসকদল।

শুধু তাই নয়, চিঠির কপি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেেকও পাঠানো হয়েছে। তাতে কংগ্রেসকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, বিরোধী দল এখন কেন্দ্রের নজরদারির মধ্যে। কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, রাহুলের ভ্রমণ প্রায়শই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হয়। সেক্ষেত্রে আগাম সব তথ্য প্রকাশ করলে তার আলোচনার পরিসর ও স্বাধীনতা সংকুচিত হয়ে যাবে। এ কারণে এ ধরনের চাপ তৈরি করা হচ্ছে। বিরোধীরা মনে করছেন, এটা আসলে বিরোধী কণ্ঠকে দুর্বল করার চেষ্টা। বিজেপির পক্ষে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রাহুলকে একেবারে স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে দেওয়া হচ্ছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সিআরপিএফ যেহেতু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে, তাই তাদের পক্ষ থেকে এমন চিঠি আসা নিছক নিরাপত্তা উদ্বেগ নয়, এর সঙ্গে স্পষ্ট রাজনৈতিক রঙ জড়িত। নিরাপত্তা বিধি মানা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু একজন বিরোধী দলনেতাকে লক্ষ্য করে বারবার অভিযোগ তোলা আসলে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করারই কৌশল। ফলত রাহুলের বিদেশ সফর এখন শুধুই ব্যক্তিগত নয়, বরং রাজনৈতিক লড়াইয়ের নতুন মঞ্চ।