রয়টার্স: এল সালভাদরে একজন সেনাসদস্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাল ধরার পর থেকে শিক্ষার্থীদের পোশাকবিধিতে আরোপ করা হয়েছে কঠোরতা। এখন থেকে দেশটিতে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা প্রথাগত মোহাক বা জনপ্রিয় 'এডগার ছাঁট' দিলে শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে। সরকারি আদেশ পালনের তাগিদে প্রতিদিন প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের যাচাই করেন কারিগরি একটি বিদ্যালয়ের পরিচালক অস্কার মেরালা। পোশাকে মনোগ্রাম থেকে শুরু করে ময়লা জুতো আর চুলের ছাঁট- কিছুই নজর এড়ায় না তার। নতুন শিক্ষামন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন কারলা ত্রিগুয়েরাসের আদেশ যথাযথভাবে পালন হয় কিনা, তা যাচাইয়ে তিনি সদাসতর্ক। তিনি বলেন, মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তার কারণেই আমরা শিক্ষার্থীদের সংশোধনের সুযোগ পাচ্ছি। এল সালভাদরের সরকারি বিদ্যালয়ে পোশাকবিধির চল থাকলেও, সরকারি আদেশের কারণে কর্তৃপক্ষ চাইলে এখন শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এসব সাজার মধ্যে রয়েছে পরীক্ষায় নাম্বার কমিয়ে দেওয়া বা বাধ্যতামূলক সমাজসেবায় অংশগ্রহণ করা।

এদিকে, নতুন শিক্ষামন্ত্রীর আদেশের ফায়দা লুটছে অনেক নাপিত। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, অনেক সেলুনের বাইরে শিক্ষার্থীদের লাইন লেগে আছে আর সেলুন মালিকরা বিশেষ মূল্যে বিভিন্ন অফার দিচ্ছেন। পোশাকবিধি নিয়ে নতুন সরকারি নির্দেশনা সম্বলিত একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এতে নিজের সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে। ওই নির্দেশনায় দেখা যায়, এখন থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য মোহাক বা এডগার ছাঁট নিষিদ্ধ। মোহাক হচ্ছে একটি লাতিন সংস্কৃতির স্টাইল, যেখানে মাথার দুপাশে ছেঁটে বা ছেঁচে মাঝের দিকের চুল বড় রাখা হয়। আর অন্যটি হচ্ছে এক ধরনের বাটি ছাঁট। সম্প্রতি বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গেছেন শিক্ষামন্ত্রী ত্রিগুয়েরাস। এসময় তাকে সামরিক পোশাক এবং চুল পেছনে টেনে বাঁধা অবস্থায় দেখা গেছে। শিক্ষক সংগঠনগুলো ত্রিগুয়েরোসকে শিক্ষা মন্ত্রী করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। সালভাদোরান টিচার্স ফ্রন্ট গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে জানায়, একজন সামরিক কর্মকর্তাকে শিক্ষা বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হাস্যকর এবং এটি সামরিক শাসনের যুগের কথা মনে করিয়ে দেয়। এদিকে, এই নির্দেশনার পক্ষে সাফাই গেয়ে প্রেসিডেন্ট বুকেলে বলেন, তাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ সংস্কার প্রয়োজন। উল্লেখ্য, সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র দমনের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বুকেলে। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই অভিযানে অনেক নিরপরাধ মানুষও আটক হয়েছেন। সম্প্রতি তার দল সাংবিধানিক সংস্কার করে রাষ্ট্রপতির মেয়াদসীমা বাতিল করেছে, যা সমালোচকদের মতে তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দেবে।