রয়টার্স : ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত কুনার প্রদেশের দুর্গম এলাকাগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে প্যারাট্রুপার সেনা কমান্ডোদের পাঠাচ্ছে আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। ইতোমধ্যে কয়েক ডজন সেনা কমান্ডোকে প্রদেশের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় পাঠানো হয়েছে। কুনার প্রদেশের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের শীর্ষ নির্বাহী এহসানউল্লাহ এহসান জানিয়েছন। তিনি বলেছেন, “সেনাবাহিনী ভূমিকম্প বিধ্বস্ত একটি গ্রামে অস্থায়ী শিবির স্থাপন করেছে। যেসব দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টার ল্যান্ডিংয়ের সুযোগ নেই, সেসব এলাকায় পাঠানো হচ্ছে প্যারাট্রুপার কমান্ডোদের। উদ্ধার তৎপরতার পাশাপাশি উপদ্রুত গ্রামগুলোতে তারা খাদ্য ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।”

গত রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১ টা ৪৭ মিনিটে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কুনারে ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প এবং তার অল্প সময়ের মধ্যে ৫ দশমিক ২ এবং ৪ দশমিক ৫ মাত্রার দু’টি ‘আফটার শক’ হয়। ভূমিকম্পের পর কুনারের বিভিন্ন গ্রাম থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৩ হাজার ১২৪ জনকে। এছাড়া ভূমিকম্পে প্রায় ৬ হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

এক বিবৃতিতে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূপৃষ্ঠের অগভীর অঞ্চলে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল হওয়ার কারণে ভূমিকম্পে এত বড় সংখ্যায় হতাহত ও ধ্বংস হয়েছে। ইউএসজেএসের তথ্য অনুসারে, কুনারের প্রধান শহর জালালাবাদ থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠের মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্প এবং আফটার শক দু’টির উৎপত্তিস্থল। হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থান হওয়ায় কুনার প্রদেশ পুরোপুরি পার্বত্য অঞ্চল এবং প্রদেশটিতে দুর্গম এলাকার অভাব নেই। পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিামাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার সঙ্গে সীমান্ত আছে কুনারের। কুনারের গ্রামীন ও দুর্গম পার্বত্য এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘরগুলো রোদে শুকানো ইটের তৈরি। দুর্বল স্থাপনাগঠনের কারণে ভূমিকম্পে হাজার হাজার বাড়িঘর ধসে বিপুল পরিমাণ ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে কুনারের বিভিন্ন গ্রামে। এই পাহাড়সম জঞ্জাল সরিয়ে মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করা দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের জন্য রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ধারকর্মীদের সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছে আফগান সেনাবাহিনী।