এএফপি ,এক্সে , আল-জাজিরা : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইল ভূখণ্ড লক্ষ্য করে বেশ কিছু রকেট ছোড়া হয়েছে। এমন দাবি করেছে দখলদার ইসরাইল। ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিয়মিত সামরিক আপডেটে জানিয়েছে, কিছুক্ষণ আগে গাজা উপত্যকা থেকে দক্ষিণ ইসরাইলে বেশ কয়েকটি রকেট ছোড়া হয়েছে। এসব রকেট খোলা জায়গায় পড়েছে। তাছাড়া গাজা থেকে রকেট ছোড়ার কারণে সীমান্তবর্তী এলাকায় ইসরাইল ‘প্রতিকূল বিমান সতর্কতা’ জারি করেছিল বলেও জানিয়েছে আল জাজিরা। দখলদারদের সেনাবাহিনীর মতে, নিরিম ও আইন হাশলোশার ইসরাইলি বসতিগুলোর কাছে রকেটগুলো আঘাত হানে। এ হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দিয়েছে হামাস। তবে বেঁধে দিয়েছে একটিমাত্র শর্ত। সেটি হলো- একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি যা এতদিন ইসরাইলের জন্য ‘রেড লাইন’ ছিল। তবে ওয়াশিংটনের প্রধান আলোচক স্টিভ উইটকফ ওই জবাবকে ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্টিভ উইটকফের মূল্যায়নের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, হামাস এখনও ‘অগ্রহণযোগ্য’ অবস্থানে এবং তাদের ‘অস্বীকৃতির নীতিতেই’ অনড় রয়েছে।

গত শুক্রবার ইসরাইল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, হামাসকে হয় প্রস্তাব মেনে নিয়ে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে, নয়তো ‘সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস’ হয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। গত শনিবার এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা মধ্যস্থতাকারী পক্ষগুলোর কাছে তাদের জবাব জমা দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, এই চুক্তির অংশ হিসেবে প্রতিরোধের হাতে থাকা দখলদার বাহিনীর ১০ জীবিত বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ১৮টি লাশ ফেরত দেওয়া হবেযার বিনিময়ে নির্ধারিত সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর একটি সূত্র জানায়, হামাস উইটকফকে একটি ইতিবাচক জবাব দিয়েছে, তবে এটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের নিশ্চয়তার ওপর জোর দিয়েছে। স্টিভ উইটকফ বলেন, হামাসের জবাব ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং এটি আমাদের আরও পিছিয়ে দিচ্ছে।’

তিনি হামাসকে আহ্বান জানান, তারা যেন ‘আমরা যে কাঠামোগত প্রস্তাব দিয়েছি, তা মেনে নেয়।’ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে উইটকফ বলেন, ‘এটাই একমাত্র উপায়, যার মাধ্যমে আমরা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তি সম্পাদন করতে পারি, যাতে জীবিত ও মৃত জিম্মিদের অর্ধেককে পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে এবং আমরা আন্তরিকভাবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে কার্যকর আলোচনা শুরু করতে পারব।’ হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম জানান, ‘আমরা উইটকফের প্রস্তাবে ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল জবাব দিয়েছি।’ তবে তিনি অভিযোগ করেন, ‘ইসরাইলের অনুকূলে আলোচনায় সম্পূর্ণ পক্ষপাতিত্ব রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মার্কিন দূতের সঙ্গে আমরা আগে যেসব বিষয় সম্মত হয়েছিলাম, তার কিছুতে ইসরাই এখন দ্বিমত পোষণ করছে।’

হামাস শুরু থেকেই বলে আসছে, যেকোনো চুক্তিতে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে অবসানের একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা থাকতে হবে। ইসরাইল বরাবরই এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তারা বলছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সংগঠনটিকে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ করা জরুরি। সম্প্রতি গাজায় হামাসকে পরাস্ত করতে ইসরাইল তার সামরিক অভিযান আরও জোরালো করেছে।