ইন্টারনেট: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মঙ্গলবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে সহযোগিতা জোরদার করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ দুই দেশের মজবুত বন্ধুত্বের প্রতীক। তিনি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রয়াসের প্রশংসা করেন এবং সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের ক্ষেত্রে পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন।

তিনি যৌথ প্রতিরক্ষা প্রকল্প শুরুর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং জানান, বৈশ্বিক ইস্যুগুলোতে তুরস্ক ও পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি প্রায় অভিন্ন, বিশেষ করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি দুই দেশের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। গাজায় চলমান সহিংসতার কঠোর নিন্দা জানান প্রেসিডেন্ট এরদোগান। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তার বক্তব্যে ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় তুরস্কের সর্বাত্মক সহায়তার জন্য প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে ধন্যবাদ জানান। তিনি এরদোয়ানকে দূরদর্শী ও প্রাজ্ঞ নেতা হিসেবে অভিহিত করেন এবং তার নেতৃত্বে তুরস্কের অগ্রগতির প্রশংসা করেন।

শাহবাজ শরিফ বলেন, সন্ত্রাসবাদ দমন করতে যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন এবং বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় একটি সর্বজনীন কৌশল গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি সন্ত্রাসবিরোধী উদ্যোগে তুরস্কের চলমান সহযোগিতার প্রশংসা করেন। আলোচনায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়। উভয় নেতা শক্তিশালী সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে জ্বালানি, খনি ও খনিজ, আইটি এবং প্রতিরক্ষা খাতকে চিহ্নিত করেন।

আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, কৃষি, বাণিজ্য এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সাইবার নিরাপত্তার মতো উদীয়মান প্রযুক্তিতে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। আলোচনায় দুই নেতা ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত সপ্তম হাই-লেভেল স্ট্র্যাটেজিক কো-অপারেশন কাউন্সিল (এইচএলএসসিসি)-এর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন এবং সহযোগিতার গতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। দুই নেতা জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে পারস্পরিক সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং গাজায় মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানান। তারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলে ছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার, বিশেষ সহকারী তারিক ফতেমি এবং তুরস্কে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত ড. ইউসুফ জুনাইদ। আন্তরিকতার নিদর্শন হিসেবে প্রেসিডেন্ট এরদোগান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তার প্রতিনিধিদলের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করেন।