জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গত শুক্রবার ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে যে, রাশিয়ার আগ্রাসনে সহায়তা বন্ধ করা উচিত। অন্যদিকে চীন অভিযোগ করেছে, ওয়াশিংটন দায় অন্যের ওপর চাপিয়ে সংঘাত উসকে দিচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ডরোথি শিয়া বলেন, বিশ্বের সব দেশ, বিশেষ করে চীন, যেন এমন দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য পণ্যের রফতানি বন্ধ করে যা রাশিয়ার সামরিক শিল্পকে সহায়তা করে এবং ইউক্রেনের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে সক্ষম করে।তিনি অভিযোগ করেন, চীনের পক্ষ থেকে কঠোর রফতানি নিয়ন্ত্রণ আরোপের দাবি অকার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে। প্রতিদিন রুশ অস্ত্র, ড্রোন ও যানবাহনে চীনে উৎপাদিত উপাদান পাওয়া যাচ্ছে।জবাবে জাতিসংঘে চীনের উপ-রাষ্ট্রদূত গেং শুয়াং বলেছেন, চীন এই যুদ্ধ শুরু করেনি, এই সংঘাতে কোনও পক্ষ নয় এবং কখনোই কোনও মারাত্মক অস্ত্র সরবরাহ করেনি। আমরা সব সময় দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য উপকরণের রফতানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি।তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানাই, তারা যেন দায় চাপানো ও উত্তেজনা তৈরি বন্ধ করে এবং যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনায় আরও গঠনমূলক ভূমিকা রাখে। চীনে তৈরি ইঞ্জিন রাশিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ড্রোন কোম্পানিকে সরবরাহ করা হয়েছে। রয়টার্স

নাসার ২০ শতাংশ কর্মী বিদায় নিচ্ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার প্রায় ২০ শতাংশ কর্মী শিগগিরই প্রতিষ্ঠানটি থেকে বিদায় নিচ্ছেন। প্রায় ৩ হাজার ৮৭০ কর্মী নাসা ছাড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সংখ্যা আগামী কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহে পরিবর্তিত হতে পারে। এসব কর্মী নাসা ছাড়ার পর সংস্থায় থেকে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা হবে প্রায় ১৪ হাজার।নাসার কর্মীদের মধ্যে অন্তত ২ হাজার ৬০০ জনের চাকরি হারানোর পেছনে রয়েছেন ট্রাম্পের সাবেক ঘনিষ্ঠ মিত্র ধনকুবের ইলন মাস্ক। তিনি সরকারি খরচ কমানোর উদ্দেশ্যে গঠিত নতুন ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগ’-এ দায়িত্ব পালনকালে এসব কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। পরে তিনি নিজেই এ বিভাগ থেকে সরে দাঁড়ান। হোয়াইট হাউস আগামী বছরের জন্য সংস্থাটির মোট বাজেটের এক-চতুর্থাংশ কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অনেক মহাকাশ মিশন বাতিল করা হয়েছে এবং ২০২৬ সালে নাসার বিজ্ঞান বাজেটের প্রায় অর্ধেক কাটা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত নাসার প্রায় ১২ কোটি ডলারের অনুদান বাতিল করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস আগামী বছরের জন্য সংস্থাটির মোট বাজেটের এক-চতুর্থাংশ কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অনেক মহাকাশ মিশন বাতিল করা হয়েছে এবং ২০২৬ সালে নাসার বিজ্ঞান বাজেটের প্রায় অর্ধেক কাটা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।কমপক্ষে চারজন মহাকাশচারীসহ নাসার প্রায় ৩০০ সাবেক ও বর্তমান কর্মী সম্প্রতি সংস্থার অন্তর্র্বতী প্রধান শন ডাফিকে একটি খোলাচিঠি দিয়েছেন। রয়টার্স

নেতানিয়াহুর মায়াকান্না

গাজায় নারীদের অধিকার নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় থাকা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সম্প্রতি ফুল সেন্ড পডকাস্টে হাজির হয়ে এ উদ্বেগ জানান তিনি। গাজা ও এর বাসিন্দাদের ধ্বংসে যিনি বদ্ধপরিকর, তাঁর মুখে এমন ‘সহানুভূতির’ কথা শুনে বিস্মিত অনেকে।নেতানিয়াহু তাঁর মায়াকান্নায় বলেন, ‘গাজার নারীরা সম্পত্তি, তাঁদের কোনো মূল্য নেই, তাঁদের কোনো অধিকার নেই, তাঁরা পুরোপুরি দমন-পীড়নের শিকার। ঈশ্বর না করুন, তাঁরা যদি কথিত কোনো অপরাধ করে বসেন, তবে তাঁদের প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়। এটি একেবারেই অযৌক্তিক।’ নেতানিয়াহু যাঁদের মুক্তির কথা বলে আবেগে গলা চড়াচ্ছেন, সেই ফিলিস্তিনি নারীদেরই মৌলিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের অধিকার ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ছিনিয়ে নিচ্ছে। নির্বিচার বোমা হামলা ও দমনমূলক নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া সেই ইসরায়েল সরকারেরই প্রধান তিনি।নেতানিয়াহুর এ বক্তব্য পডকাস্টে প্রচারিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।একজন লিখেছেন, ‘ওদের মুক্তি দিচ্ছি বলে বোমা মারছিÍকী ভণ্ডামি!’ আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘গাজার নারীরা শিক্ষিত, চিকিৎসক, নার্স, আইনজীবী, প্রকৌশলী, শিল্পী, শিক্ষক এবং একই সঙ্গে মা, বোন, স্ত্রী। তাঁরা সবচেয়ে শক্তিশালী নারী। শুধু হিজাব বা পর্দা করার কারণে তাঁদের অবদমিত হিসেবে চিত্রায়ণ করা ভয়ংকর অপমানজনক।’আরও একজন লিখেছেন, ‘নারীদের অধিকার নিয়ে কথা বলার সময় আপনি তাঁদের ঘরবাড়িতে বোমা ফেলছেন, সন্তানদের না খাইয়ে মারছেন, চিকিৎসাসেবা ও নিরাপত্তার সুযোগ কেড়ে নিচ্ছেন। দখলদারি নারীবাদ চলে না। নারীদের মেরে মুক্তি দেওয়া যায় না।’ নেতানিয়াহুর এ বক্তব্যকে শুধু ভণ্ডামি নয়; বরং ইতিহাস বিকৃতিরও প্রয়াস বলে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, ফিলিস্তিনি নারীরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও প্রতিরোধ সংগ্রামের অগ্রভাগে আছেন। ডন, এএফপি