এনডিটিভি: সৌদি আরবের সঙ্গে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রয় চুক্তি বিবেচনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘তারা অনেকগুলো জেট কিনতে চায়। আমি বিষয়টি বিবেচনা করছি। তারা অনেক ‘৩৫’ কিনতে চায় বরং তার থেকেও বেশি, যুদ্ধবিমান।’ ধারণা করা হচ্ছে, সম্ভাব্য বিক্রয় চুক্তিটি আগামী সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। এই বৈঠকে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা আছে। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর থেকে ফের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের বিস্তারিত তথ্য

এফ-৩৫ কী? এর ধরনগুলো কী কী?: এফ-৩৫ লাইটনিং ২ হলো পঞ্চম প্রজন্মের এক আসনের, এক ইঞ্জিনের স্টেলথ মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান। এই যুদ্ধবিমান আকাশে প্রাধান্য বিস্তার, স্ট্রাইক মিশন, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ সব ধরনের কাজেই সক্ষম।

এটির তিনটি প্রধান ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে: ১. এফ-৩৫এ: সাধারণ টেকঅফ ও ল্যান্ডিং (সিটিওএল)

২. এফ-৩৫বি: স্বল্প দূরত্বে টেকঅফ এবং উল্লম্ব ল্যান্ডিং (এসটিওভিএল)

৩. এফ-৩৫সি: ক্যারিয়ার-ভিত্তিক অপারেশনের জন্য তৈরি

এফ-৩৫ এর বিশেষ প্রযুক্তি : এই জেটের স্টেলথ ক্ষমতা, সেন্সর ফিউশন টেকনোলজি এবং বাস্তবসময়ে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যোগাযোগের সক্ষমতাই এটিকে আগের প্রজন্মের যুদ্ধবিমান থেকে পৃথক করে।

এফ-৩৫’র কিছু মূল প্রযুক্তি: বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ অস্ত্র: এমবিডিএ মিটিয়রের মতো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পাইলট খালি চোখে লক্ষ্যবস্তু দেখা যাওয়ার আগেই আক্রমণ করতে পারে। রাডার, ইনফ্রারেড সিস্টেম ও বাইরের উৎসের তথ্য একত্র করে জেটটি একক ছবি তৈরি করে পাইলটকে দেখায়। হেলমেট-মাউন্টেড ডিসপ্লে সিস্টেম: পাইলট বিমানটির ভেতর দিয়ে যেন বাইরে দেখতে পান; শুধু তাকিয়েই টার্গেট লক করা যায়। ডাটা কানেক্টিভিটি: এফ-৩৫ আকাশে একটি নোডের মতো কাজ করেÍস্থল, আকাশ এবং নৌবাহিনীর ইউনিটের সঙ্গে বাস্তবসময়ে তথ্য আদান-প্রদান করে। এফ-৩৫বি’র উল্লম্ব টেকঅফ/ল্যান্ডিং ক্ষমতা: ছোট রানওয়ে বা সামনের লাইনের ঘাঁটিÍযেখানে পূর্ণাঙ্গ রানওয়ে নেই, এটি সেখানে অপারেশন পরিচালনার জন্য আদর্শ। লকহিড মার্টিন জানিয়েছে, তিনটি এফ-৩৫ ভ্যারিয়েন্টেই আধুনিক আপডেট অব্যাহত রয়েছে, যা ভবিষ্যতের সমতুল্য প্রতিদ্বন্দ্বী হুমকির বিরুদ্ধে এর প্রাধান্য ধরে রাখবে।

বিশ্বব্যাপী ব্যবহার: এ পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি দেশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনা করছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইসরাইল, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ইসরাইল যুদ্ধক্ষেত্রে বিমানটির সবচেয়ে সক্রিয় ব্যবহারকারী। সিরিয়ায় বহু হামলায় তেল আবিব এটি ব্যবহার করেছে বলে খবর রয়েছে। ইরান দাবি করেছে তারা কমপক্ষে একটি ইসরাইলি এফ-৩৫ বিমান গুলি করে নামিয়েছে। যদিও এ দাবির পক্ষে কোনো স্বাধীন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।