বিবিসি : সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুইদা প্রদেশে দ্রুজ মিলিশিয়া ও সুন্নি বেদুইন উপজাতিদের মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।

রবিবার সুইদা শহরের আল-মাকওয়াস এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। এই এলাকায় মূলত বেদুইন জনগোষ্ঠীর বসবাস। অভিযোগ রয়েছে, এলাকাটি প্রথমে ঘিরে ফেলে পরে দখলে নেয় সশস্ত্র দ্রুজ যোদ্ধারা। এরপর সংঘর্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে শহরের পশ্চিম ও উত্তর প্রান্তে থাকা দ্রুজ অধ্যুষিত গ্রাম ও শহরে।

সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতির প্রেক্ষাপটে এ ধরনের সহিংসতা এক বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও স্থানীয় সমাজের পক্ষ থেকে বারবার শান্তির আহ্বান সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।

লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে ২৭ জন দ্রুজ, যাদের মধ্যে দুইজন শিশু এবং ১০ জন বেদুইন।

সংস্থাটি আরও জানায়, সুমাই ও মাজরাহ শহর দুটিতে গোলাবর্ষণ হয়েছে এবং তায়রাহ গ্রামের বাসিন্দারা পালিয়ে গেছে। সেখানে আগুন দিয়ে কয়েকটি বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সংঘাতের শুরু দু’দিন আগে দামেস্কগামী মহাসড়কে এক দ্রুজ ব্যবসায়ীর অপহরণকে কেন্দ্র করে। এর জবাবে স্থানীয় দ্রুজ মিলিশিয়ারা বেদুইন অধ্যুষিত এলাকায় অভিযান চালায়। এরপর পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা প্রদেশ।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সুয়েইদা ২৪ জানায়, রবিবার রাতে উভয় সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যস্থতায় বন্দি বিনিময় ও সংঘর্ষ প্রশমনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে সোমবার সকালেই নতুন করে শহরের পশ্চিমাঞ্চলে ড্রোন হামলার খবর পাওয়া যায়। একইসাথে সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ব দেরা অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

উত্তপ্ত পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ‘সরাসরি অভিযান’ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। সুইদার গভর্নর মুস্তাফা আল-বাকুর সাধারণ জনগণকে ‘আত্মসংযম’ চর্চা করতে ও জাতীয় সংস্কারের আহ্বানে সাড়া দিতে বলেছেন।

একই সঙ্গে তিন সুইদার একাধিক প্রভাবশালী দ্রুজ ধর্মীয় নেতা জনগণকে সংঘর্ষ পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।