এনডিটিভি: পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে (পিওকে) চলমান বিদ্রোহে দেশটির সেনাবাহিনী ও সরকারের অবস্থানকে ‘মানুষ হত্যায় বেপরোয়া এক ডাইনির সঙ্গে’ তুলনা করেছেন আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির (এএসি) জ্যেষ্ঠ নেতা শওকত নবাজ মীর। তিনি অভিযোগ করেন, ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডি যে জনগণের প্রতিনিধিত্বের দাবি করে, আসলে সেই জনগণকেই দশকের পর দশক ধরে শোষণ ও দমন করছে। মীর ঘোষণা দেন, কথিত ‘আজাদ কাশ্মীর’ আদৌ মুক্ত নয়, বরং দীর্ঘ শৃঙ্খলিত দাসত্বে আবদ্ধ। এএসি নেতা অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের শাসকেরা যেসব অপরাধের দায়ভার অন্যের ওপর চাপায়, আসলে নিজেরাই সেই নৃশংসতার জন্য দায়ী। সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের বিতর্কিত বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মীর বলেন, তারা ভারতের হিন্দুদের ‘কাফের’ বলে অভিযোগ তোলে, অথচ তাদেরই হাত কাশ্মীরিদের রক্তে ভেজা।
তিনি অভিযোগ করেন, ভিন্নমত বর্বরভাবে দমন করা হচ্ছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে স্তব্ধ করে দেওয়া হচ্ছে আর আন্দোলনরত জনগণের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করা হচ্ছে। ইসলামাবাদ ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এই বাক্যবাণ তিনি যখন ছুঁড়লেন, তখন কাশ্মিরজুড়ে বিক্ষোভ তীব্রতর হয়েছে। ন্যায্য অধিকার, ন্যায়বিচার ও দমন-পীড়নের অবসান দাবি করছে বিক্ষুব্ধ জনতা। প্রথমে বিদ্যুতের বিল ও খাদ্যসংকটের প্রতিবাদ থেকে শুরু হলেও এই আন্দোলন রূপ নিয়েছে সরাসরি পাকিস্তানি শাসনব্যবস্থা ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে। জনগণ দশকের পর দশক অবহেলা, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অধিকার বঞ্চনার অভিযোগ তুলছে। হাজারো মানুষের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে মীর বলেন, আমাদের সংগ্রাম কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং পুরো একটি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। এটি জনগণের সংগ্রাম, আপনাদের সংগ্রাম, আমাদের সবার সংগ্রাম। আমরা সবাই মিলে এই দমনমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলব। বেসামরিক সমাজের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ও বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে এ বক্তব্য দেন মির। এরমধ্যে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ জন বেসামরিক নিহত ও দুশতাধিক আহত হয়েছেন। এছাড়া পাকিস্তানি রেঞ্জার ও ইসলামাবাদ পুলিশের গুলিতে তিন জন পুলিশ নিহত ও নয় জন আহত হয়েছে। মীর স্পষ্ট বলেছেন, আমাদের একটাই দাবি ন্যায়বিচার ও জনগণের অধিকার। এটা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা পিছু হটব না।