এএফপি: ফিলিস্তিনের গাজায় মধ্যরাতে ১২টি ইসরাইলী বিমান হামলায় অন্তত ৬২ জন ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই দক্ষিণের শহর খান ইউনিসের। হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বিবিসিকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর দুইটার দিকে খান ইউনিস থেকে ৫৬ জন, উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া থেকে চারজন এবং মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল।
নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু ছিল। মুখপাত্র আরও জানান, খান ইউনিসের ১৩ সদস্যের সামুর পরিবারের নাম নাগরিক নিবন্ধন থেকে পুরোপুরি মুছে ফেলা হয়েছে। এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালানোর পাশাপাশি উত্তরে বেসামরিক নাগরিকদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। ইতোমধ্যেই আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাজা সিটির বাসিন্দাদের ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ‘তীব্র হামলা’ শুরু হওয়ার আগেই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য চলে যেতে বলা হয়েছে।
বিশেষভাবে ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, আল-শিফা হাসপাতাল এবং তিনটি প্রাক্তন স্কুল খালি করার কথা বলেছে ইসরাইল এবং তারা অভিযোগ করেছে, ভবনগুলো হামাস তাদের কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছে।
তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, সেখানে হাজার হাজার বেসামরিক লোক আশ্রয় নিয়েছে এবং এই এলাকাগুলো থেকে তাদের সরিয়ে নিতে সময় লাগবে। এতে বিপুল সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে ফিলিস্তিনের গাজার ওপর দখলদার ইসরাইল সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে বলে সেটিকে দখলে নিতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওই অঞ্চলকে ‘দখল’ করে সেটিকে ‘ফ্রিডম জোন’ ঘোষণা করতে চান। গতকাল বৃহস্পতিবার মিডল ইস্ট সফরের তৃতীয় দিনে কাতারে এমন মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, গাজা নিয়ে তার একটি পরিকল্পনা আছে। যদি তিনি তা সফলভাবে সমাধান করতে পারেন, তবে গর্বিত হবেন।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমার কাছে গাজা নিয়ে একটি আইডিয়া আছে, আমি মনে করি এটা বেশ ভালো। আমেরিকাকে বিষয়টি নিয়ে ভাবকে দিন এবং এটিকে একটি মুক্ত অঞ্চল বানাই। এটিকে ফ্রিডম জোন বানাই।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘ইউনাইটেড স্টেটস যদি এটি পেলে গর্বিত হব। আমেরিকা এটি নিয়ে নিক, দখল করুক এবং এটিকে ফ্রিডম জোন বানাক।’
এরআগে, সফরে তিনি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ট্রাম্প আবারও ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ইরান যদি নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হয়, তবে তার দেশের বিরুদ্ধে আবারও ব্যাপক সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করা হবে। ট্রাম্প আরও বলেন, আমি ইরানের তেল রফতানি শূন্যে নামিয়ে আনব। সময় খুব কমÍতাদের এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদিও ট্রাম্পের চলমান মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইসরাইল সফরের কোনো কর্মসূচি নেই, তবে তার বক্তব্যে স্পষ্টএই অঞ্চলের কূটনীতিতে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আগ্রহী। তবে গাজা যুদ্ধের কারণে ইসরাইল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা বর্তমানে স্থবির হয়ে আছে।