সামা টিভি : জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে দোহায় হামলার পক্ষে ইসরাইলের যুক্তিকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। দেশটির স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতিখার আহমদ ইসরাইলকে ‘দখলদার, আগ্রাসী এবং আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের অভ্যাসী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘নিজেদের অবৈধ কার্যকলাপ ঢাকতে বিন লাদেন ঘটনার উদাহরণ টেনে আনা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’ গত বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে কাতার, আলজেরিয়া ও সোমালিয়ার উদ্যোগে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে অধিকাংশ সদস্য ইসরাইলের দোহা হামলার নিন্দা জানালেও ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন দাবি করেন, সন্ত্রাসীদের জন্য কোনো জায়গা নিরাপদ নয়—গাজা, তেহরান বা দোহা কোনোটিই নয়। এর পাল্টা জবাবে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইসরাইল এমন এক দখলদার, যে কারও কথা শোনে না, এমনকি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর পরামর্শও উপেক্ষা করে। আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশনা কিংবা জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও উপেক্ষা করে। এর অপকর্মের জন্য যেসব শক্তি আশ্রয় দেয়, তারাই এদের বারবার দায়মুক্তি দেয়।’ আসিম ইফতিখার স্পষ্ট করে জানান, পাকিস্তানের অবস্থান আগে থেকেই পরিষ্কার—দেশটি সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে অগ্রভাগে থেকে লড়েছে এবং আল-কায়েদাকে কার্যত ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, ‘যে রাষ্ট্র দখলদারিত্বের নামে গাজায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছে, আসল অপরাধী সেই ইসরাইল।’ কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় আলোচক দলের আবাসস্থলে ইসরাইলি হামলাকে ‘সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরাইল আলোচনার প্রধান মধ্যস্থতাকারী দেশকেই আঘাত করেছে, যা শান্তি প্রচেষ্টাকে বানচাল করার স্পষ্ট চেষ্টা। আল-থানি প্রশ্ন রাখেন, ‘কোনো রাষ্ট্র কি কখনো মধ্যস্থতাকারীর ওপর এভাবে হামলা চালিয়েছে? যুক্তরাষ্ট্র তালেবান-দোহা আলোচনায় অংশ নিলেও কখনো আলোচকদের ওপর হামলা করেনি। ইসরাইলই ব্যতিক্রম।’

বন্দিদের পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘কাতারে পরিচালিত লক্ষ্যভিত্তিক অভিযান নিঃসন্দেহে প্রমাণ করেছে যে ৪৮ বন্দি ফিরিয়ে আনা এবং যুদ্ধ শেষ করার একমাত্র বাধা হল প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এখন সময় এসেছে অজুহাত শেষ করার, যা শুধু তার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তৈরি।’ ফোরামটি আরও উল্লেখ করেছে, নেতানিয়াহুর ‘স্থবিরতা’ ইতোমধ্যে ৪২ বন্দির জীবন হারানোর কারণ হয়েছে এবং বাকি বন্দিদের জীবনও ঝুঁকিতে রেখেছে। তবে দোহায় হামলার বিষয়ে নেতানিয়াহু বলেন, এই পদক্ষেপ ‘সম্পূর্ণভাবে ন্যায়সঙ্গত’, কারণ এটি ৭ অক্টোবরের হামলার পরিকল্পনাকারী সিনিয়র হামাস নেতাদের লক্ষ্য করেছিল।