এনডিটিভি : ওয়াক্ফ আইন চ্যালেঞ্জ করে হওয়া মামলার শুনানি ১৬ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে শুরু হতে পারে। এ মামলা–সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এক ক্যাভিয়েট দাখিল করেছে। সরকার অনুরোধ করেছে, মামলার রায় দেওয়ার আগে তাদের বক্তব্য যেন শোনা হয়। এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই অন্তত ১৫টি মামলা করা হয়েছে। মামলাগুলো দ্রুত শোনার আরজি জানিয়েছিলেন আবেদনকারীরা। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না আবেদনকারীদের বলেছিলেন, সর্বোচ্চ আদালতের ব্যবস্থা অনুযায়ী মামলা লিপিবদ্ধ করা হবে। ১৬ এপ্রিল মামলা শুনতে সর্বোচ্চ আদালত রাজি হয়েছেন।
ওয়াক্ফ বিল পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাতে সম্মতি দেওয়ায় সেটি আইনে রূপান্তরিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার গত মঙ্গলবার আইন কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। গতকাল মঙ্গলবারই নতুন আইন সারা দেশে বলবৎ হয়েছে। নতুন আইন চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই অন্তত ১৫টি মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড, জামায়াতে উলেমা ই হিন্দ ও অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব সিভিল রাইটস (এপিসিআর)। এই তিন সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা মহম্মদ জাভেদ ও ইমরান প্রতাপগড়ি, হায়দরাবাদের এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি, বিহারের আরজেডি নেতা মনোজ ঝা ও ফয়াজ আহমেদ, ডিএমকের এ রাজা। মণিপুরের শাসক জোট এনডিএর শরিক এনপিপি নেতা শেখ নুরুল হাসানও মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নতুন এই আইনের বিরোধিতায় বিভিন্ন রাজ্যে অশান্তি ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় গত মঙ্গলবার ব্যাপক সহিংসতা ছড়ায়। উত্তেজিত জনতা পুলিশকে আক্রমণ করে। পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। চারজন পুলিশ আহত হন। সংঘর্ষ বাধে মণিপুরেও। উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিক্ষোভকারী মুসলমানদের মুচলেকা নেওয়া শুরু করেছে।
ওয়াক্ফ বিল সংসদে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশে ছিলেন না। বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন। সেখান থেকে শ্রীলঙ্কা। গত মঙ্গলবার তিনি দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ওয়াক্ফ আইন সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে এটি এক বড় পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, এই আইনে গরিব মুসলমান, নারী ও শিশুদের অধিকার সুরক্ষিত হবে। ওই অনুষ্ঠানে বিরোধীদের সমালোচনা করতেও মোদি ছাড়েননি। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময় থেকেই বিরোধীরা তোষণের রাজনীতি চালিয়ে আসছে। সেই তোষণনীতি মুষ্টিমেয় মৌলবাদীদের উপকার করলেও সাধারণ মুসলমানদের বঞ্চিত রেখেছে। নতুন আইন মুসলমান সমাজের সবার অধিকার সুরক্ষিত করবে।